ঈদ উল আজহার আর মাত্র ৯ দিন বাকি। ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে রাজশাহী সিটি পশুর হাট। রোববার ও বুধবার সাপ্তাহিক হাটবারসহ এখন প্রতিদিনই বসবে পশু হাট। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হওয়া হাটে পশু বেচাকেনা এখন জমজমাট।
শুক্রবার (১ জুলাই) সিটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাঁক-ডাকে জমে উঠেছে হাট প্রাঙ্গন। ক্রেতাদের নজর মাঝরি পশুর দিকেই বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় ভালো দামে গরু-মহিষ বিক্রির প্রত্যাশা রয়েছে। ৫ মণের কিছু কম-বেশি ওজনের মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। এই সাইজের গরুর দামও তাই ভালো।
এই হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন জেলার পবা উপজেলা সদরের আইনাল হক। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু কিনে এই হাটে বিক্রি করি। ঈদের হাটে প্রতিটা গরুতে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ থাকে। এবারও সেই প্রত্যাশা নিয়ে গরু কিনেছেন। হাটে বিক্রেতা প্রচুর। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কম।’
তিনি বলেন, ‘এবারের হাটে লাল রঙের একটি ষাঁড় বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছি। এটির ওজন আনুমানিক সাড়ে ৩ মণ। দাম চাচ্ছি ৭৮ হাজার টাকা।’
আশরাফ হোসেন নামের অপর এক গরু খামারি বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এইবার গরুর দাম বেশি। কিন্তু গরুর উৎপাদন খরচ বিবেচনায় সেই তুলনায় বাড়েনি গরুর দাম।’
আইনাল কবিরাজ নামের এক ক্রেতা বলেন, ৫ মণ ওজনের একটি গরু কিনতে তারা ৭ জন এসেছেন। হাটের শুরুর দিকে তারা প্রতিবার আসেন। কারণ প্রত্যাশিত দামের মধ্যে শেষের দিকে হাটে গরু পাওয়া যায় না। এবার গরুর দাম চড়া। মহিষেও স্বস্তি নাই। হাট-ঘুরে পছন্দ মতো গরু কিনবেন।
রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, ঈদের আগে হাটে পশু সরবরাহ ভালো আছে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা আসছেন। করোনার কারণে গতবার বাইরে থেকে ব্যাপারিরা সেভাবে আসতে পারেননি। এবার সবাই আছে। স্থানীয় পর্যায়ের কিছু ক্রেতা দেখে শুনে গরু কিনছেন। বাইরের ক্রেতারাও গরু-মহিষ কিনছেন।’
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, ‘রাজশাহীতে কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত আছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৫২ টি। ১৬ হাজার ৭৯টি খামারির এসব পশু। পশুর যোগান বেশি থাকায় এবার ঈদ বাজার খামারি ও ক্রেতা উভয়ের অনুকূলে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভারত থেকে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে গরু আমদানি বন্ধের বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই খামারিরা ভালো দাম পাবেন।’
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রাজশাহীর আট জেলায় মোট কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৬০টি।