‘ইলিশ শুধু নামেই জাতীয় মাছ। এখন ভরা মৌসুম, অথচ সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ইলিশ মাছ। ইলিশের দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন অল্প আয়ের ক্রেতারা। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অবস্থা এমন যে, ইলিশ মাছ স্বপ্নে দেখাও বড় পাপ, ভয় লাগে।’
উল্লিখিত কথাগুলো বলেছেন রাজধানীর জিগাতলা সালেক গার্ডেন বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী রাকিব হাসান।তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘আমার মতো মানুষের তিন দিনের বেতনের সমান এক কেজি ইলিশ মাছের দাম। এ বছরে এখন পর্যন্ত ইলিশ মাছের স্বাদ নিতে পারিনি। আবার সামনে কিছুদিন পর ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। সন্তান ইলিশ নিতে বলেছে, অথচ খালি হাতে বাসায় যাচ্ছি। খুব লজ্জা লাগে। সব সিন্ডিকেটের দোষ।’
জিগাতলার সালেক গার্ডেন কাঁচা বাজারের ইলিশ বিক্রেতা শাহজাহান মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, এখন বাজারে ইলিশের সরবারহ ভালো। সাধারণ ক্রেতারা ভিড় করে, দাম শুনে না নিয়ে চলে যায়। তবে, বড় বড় স্যারেরা তাদের চাহিদামতো নিয়ে যায়। আজ ১ কেজি ২০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি করছি ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। ১ কেজির নিচের ইলিশের দাম ১ হাজার ২০০ টাকা। পদ্মার ইলিশ ও চট্টগ্রামের ইলিশের মধ্যে দামের পার্থক্য ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
বাজারে অন্য মাছের দামও বেশ চড়া। এক কেজি চাষের শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩০০-৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি রুই, কাতলা ও মৃগেল আকারভেদে বিক্রি ৩৫০-৪৫০ টাকায় এবং পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া ১৯০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-২০ টাকা। প্রতি কেজি লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, ধুন্দুল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুরমুখি ৮০ টাকা, সিম ২০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ৬০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা এবং জালি কুমড়া ৬০ টাকা। কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের দাম এখনও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এক ডজন মুরগির লাল ডিম ১৫৫-১৬০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা, কক মুরগি ৩২০ টাকা, কক হাইব্রিড ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা এবং লেয়ার ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।