ক্রিকেটাররা আন্দোলনে যাচ্ছেন। বিপিএলের পারিশ্রমিক, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন, ম্যাচ ফি ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা এবং ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের দল বদল আগের মতো খোলা ও স্বাধীনভাবে করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সোচ্চার জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
আজ দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতে না নামতেই সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহসহ অর্ধশতাধিক ক্রিকেটার মিরপুরের একাডেমি মাঠে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং আলটিমেটাম দেন, ‘দাবি না মানলে ঘরোয়া ক্রিকেট মানে চলমান জাতীয় লিগসহ জাতীয় দলের অনুশীলন ও বিদেশ সফর না করার’। যদিও ক্রিকেটারদের পক্ষ থেকে এমন কিছু আসবে- তা ঘূর্ণাক্ষরেও জানা ছিল না কারো।
বিসিবিপ্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনেই বলেছেন, ক্রিকেটারদের আন্দোলনের বিষয়ে তারা কিছুই জানতেন না। ক্রিকেটাররা তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে আগে থেকে কিছুই জানায়নি। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান এবং বোর্ডের অন্যতম নীতিনির্ধারক আকরাম খানসহ আরও কয়েকজন পরিচালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ‘ক্রিকেটাররা ভিতরে ভিতরে ফুঁসছেন, নিজেদের দাবিতে সোচ্চার হয়ে বড় ধরনের আন্দোলনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন- এমন খবর মিডিয়ায় আসে আজ দুপুর পৌনে ১টার দিকে।’
জানা গিয়েছিল, জাতীয় দলের বর্তমান সদস্যসহ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা দুপুর ২টার দিকে বোর্ডে আসবেন এবং আগে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে নিজেদের মনোভাব জানাবেন। এদিকে ক্রিকেটাররা মিডিয়ার সামনে ১১ দফা দাবি তোলার অল্প কিছুক্ষণ পরই মিডিয়ার সামনে আসেন বিসিবিপ্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন।
নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনও পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তারা কিছুই জানতেন না। তার ভাষায়, ‘ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বিচ্ছিন্নভাবে কারো কারো মুখ থেকে কিছু দাবির কথা শোনা গেলেও ক্রিকেটাররা যে ভিতরে ভিতরে ফুঁসে আছেন। রীতিমতো একটা বিস্ফোরণ-উন্মুখ অবস্থা- তা তাদের জানা ছিল না।’
কারণ, ক্রিকেটাররা আগে তাদের লিখিতভাবে কিংবা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানাননি। মোটকথা সিইও বোঝাতে চাইলেন, ক্রিকেটারদের কোনো দাবিই বোর্ডের কাছে আগে পেশ করা হয়নি। আজই তারা জেনেছেন এবং সেটা আজই, মিডিয়ার কাছ থেকে।
তাই বিসিবি প্রধান নির্বাহীর মুখে এমন কথা, ‘আমরা জানতে পেরেছি মূলত মিডিয়ার মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। আমাদের সাথে কথা হয়নি। আমি আবারও বলছি প্লেয়াররা আমাদের বড় সম্পদ। প্লেয়ারদের বিভিন্ন দাবি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখি। বিভিন্ন সময় সে সব দাবি মানার চেষ্টাও করা হয়েছে; কিন্তু আজ যা বলা হলো, তা আমরা আজকেই জেনেছি। তাও আপনাদের মানে মিডিয়ার কাছ থেকে। আমরা মাত্র জানলাম। তারপরও ফর্মালি কিছু জানতে পারিনি। মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিষয়টি আমরা দেখবো।’
সিইওর কণ্ঠে, বসেই সব বিষয়ের সমাধান করার আশ্বাস। নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন কিছুতেই মানতে নারাজ যে, এটা কোনো বিদ্রোহ। তার ভাষায়, ‘না না, এটা কোনো বিদ্রোহ নয়। প্লেয়াররা বোর্ডেরই পার্ট।’ ভাবটা এমন, তারা তাদের দাবি ও চাওয়া-পাওয়ার কথা প্রকাশ করেছে। আমরা চেষ্টা করবো বসে এবং বোর্ডে কথা বলে সে দাবি মেটাতে।