ক্রিকেটারদের জন্য পাপনের বার্তা : শৃঙ্খলা ভাঙলে রক্ষা নাই

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago
নাজমুল হাসান পাপন

বছরের প্রথম দিনই কঠিন শাস্তির মুখে সাব্বির রহমান রুম্মন। জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডে এক কিশোর দর্শককে মারধরের অভিযোগে জাতীয় দলের মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যানকে ২০ লাখ টাকা অর্থদন্ড, আগামী ছয় মাস ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ (তাতে করে এবারের প্রিমিয়ার লিগ খেলা সম্ভাবনা কম) এবং বিসিবির বেতনভূক্ত ক্রিকেটারের তালিকায় নাম কাটা- মানে বোর্ডের সাথে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেয়ার সুপারিশ এসেছে। বিসিবি ডিসিপ্লিনারি কমিটি এই সুপারিশগুলো করেছে।

বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের কথা শুনে মনে হচ্ছে, সে সুপারিশ বোর্ডের পরবর্তী সভাতেই হয়ত পাশ হয়ে যাবে। তার মানে কিশোর দর্শককে পেটানোর মজাটা হাড়ে-হাড়ে টের পাবেন সাব্বির।

জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন। সেটা শুধু ব্যাট ও বল হাতে মাঠে নয়। তারা আসলে খেলোয়াড়ের তকমা এঁটে দেশের দূত হিসেবে কাজ করেন সারা বিশ্বে। দেশের মান-মর্যাদা ও জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার দায়িত্ব তাদের কাঁধে। তারা কে কেমন ব্যাটিং ও বোলিং করলেন, সেটাই ধর্তব্য নয়। মাঠের পারফরমেন্সের বাইরে তাদের কথা-বার্তা, আচরণ ও বিভিন্ন কার্যক্রম পাখির চোখে পরখ করা হয়।

তাদের কোন নেতিবাচক আচরণে দেশের ক্রিকেটের গায়ে কালো চিহ্ন এসে লাগে। গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের কেউ না কেউ ব্যক্তিগতভাবে নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন। পেসার রুবেল হোসেন, সাহাদাত হোসেন রাজীব এবং মোহাম্মদ শহীদ ও বাঁ-হাতি স্পিনার আরাফাত সানির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। সাব্বিরের বিপক্ষে এর আগেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল এবং শাস্তির মুখোমুখি করা হয়েছে তাকে।

এবার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সাব্বির এক কিশোর ক্রিকেট অনুরাগীর গায়ে হাত তুলে বসেছেন। তার এই নেতিবাচক আচরণের শাস্তির কথাই ভাবছে বোর্ড। আজ সাংবাদিকদের সাথে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের কথা শুনে মনে হচ্ছে, বোর্ড আগামীতে ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলার বিষয়ে খুব কঠোর নীতি অবলম্বন করবে। কেউ কোনো রকম শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করলে আর রক্ষা নেই। কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।

সাব্বির রহমান রুম্মনের বিপক্ষে সম্ভাব্য শাস্তির কথা উল্লেখ করে সোমবার ইংরেজী নতুন বছরের প্রথম দিন বিকেলে বিসিবি প্রধান বলে ওঠেন, ‘বছরের প্রথমদিনই আমরা যে পদক্ষেপ নিচ্ছি, এটা ক্রিকেটারদের জন্য এক কঠিন বার্তা। যা আমরা সব খেলোয়াড়দেরকেই দিচ্ছি। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। সে যত বড় খেলোয়াড়ই হোক না কেন। শৃঙ্খলা তাদেরকে মানতেই হবে।’

ক্রিকেট এখন অনেক জনপ্রিয় খেলা। ক্রিকেটাররা দেশের আইকন, আদর্শ। এটা মাথায় রেখে চলার পরামর্শ দেন পাপন। তাইতো তার মুখে এমন কথা, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন এত জনপ্রিয়, এরা (ক্রিকেটাররা) একেকজন একেকটা আইকন। আদর্শ হয়ে গেছে। আজকে অধিনায়কদেরও এই বার্তা দেয়া হয়েছে। তোমাদেরকে সবাই অনুসরণ করবে। নতুন প্রজন্ম, ছোট ছোট বাচ্চারা বলবে- আমি বড় হয়ে সাকিব হতে চাই, মাশরাফি হতে চাই। তামিম, মুশফিক, রিয়াদ হতে চাই। তোমাদের কোনো ভুল করা যাবে না। এসব ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। ওরা সব খেলোয়াড়কে বলবে, আমরা তো বলবোই। তবে বছরের প্রথম দিন যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা খুব একটা কম না।’