ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপির বিকল্প আবিষ্কার!

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

ইঁদুরের শরীরে তামার তৈরি ক্ষুদ্র ধাতব কণা ব্যবহার করে ক্যান্সার নিরাময়ে সফল হয়েছেন জার্মানির একদল বিজ্ঞানী। শুধু তাই নয়, এই ধাতব কণা প্রয়োগের পর ইঁদুরের শরীরে আর ক্যান্সার ফিরে আসেনি বলে দাবি করেছেন তারা।

জার্মানির বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল অ্যাজিওয়ান্তে কেমির আন্তর্জাতিক সংস্করণে ক্যান্সারের নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতির সফলতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা ক্যান্সার আক্রান্ত বেশ কিছু ইঁদুরের শরীরে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে বিশেষভাবে তৈরি কপার অক্সাইড ধাতব কণা প্রয়োগ করেন।

কপার (তামা) এবং অক্সিজেনের সংমিশ্রণে কপার অক্সাইড তৈরি হয়। বিজ্ঞানীরা এই কপার অক্সাইডকে ক্ষুদ্র ধাতব কণার রূপ দেন; যা মানুষের চুলের চেয়ে শতগুণ পাতলা। চিকিৎসকরা ক্যান্সার আক্রান্ত ইঁদুরের শরীরের টিউমারে এই ধাতব কণা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন।

এই ধাতব কণা ইঁদুরের শরীরে প্রয়োগের পর ইতিবাচক ফল পেয়েছেন তারা। ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল বলছে, ধাতব কণা প্রয়োগে ক্যান্সার নিরাময় হয়েছে এবং ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ প্রাণীর শরীরে আবারও ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দেয়া হয়। পরে দেখা যায়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই ক্যান্সার কোষকে সরাসরি ধ্বংস করেছে।

তবে নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতি এখন মানব শরীরে প্রয়োগের অপেক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের আশা, ক্যান্সার আক্রান্ত প্রায় ৬০ শতাংশ রোগীর চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত কেমোথেরাপির বিকল্প হতে পারে নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতি।

গবেষক দলের অন্যতম দুই সদস্য জার্মানির কেইউ লিভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টেফান সোনেন এবং চিকিৎসক বেলা মানশিয়ান। সতর্ক করে দিয়ে তারা বলেন, আমরা যদি এই ধাতব অক্সাইড বেশি পরিমাণে গ্রহণ করি, তাহলে সেটি বিপজ্জনক হতে পারে। কিন্তু যদি অতি ক্ষুদ্র পরিমাণে, নিরাপদ, নিয়ন্ত্রিত উপায়ে নেয়া হয়, তাহলে সেটি উপকারী হতে পারে।

অধ্যাপক সোনেন বলেন, আমি যতটুকু জানি, লাইভ মডেলে ক্যান্সার কোষের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রথমবারের মতো ধাতব অক্সাইড ব্যবহার করা হচ্ছে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আমরা অন্যান্য ক্ষুদ্র ধাতব কণা তৈরি করতে চাই এবং এর মাধ্যমে কোন কোন কণা কোন ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে তা শনাক্ত করা হবে।

গবেষণায় ব্যবহৃত ইঁদুরের ফুসফুস এবং অন্ত্রে ক্যান্সার ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিয়েছেন, ওভারিয়ান ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায়ও এই কপার অক্সাইড কাজ করতে পারে। শরীরের জীবন্ত কোষে এই ধাতব কণাগুলো বিষক্রিয়া তৈরি এবং মানব শরীরের ক্ষতির পাশাপাশি ডিএনএর পুনরুৎপাদন ব্যাহত করে।

ক্যান্সার টিউমারে সরাসরি এই ধাতব কণা ক্ষুদ্র পরিমাণে ব্যবহার করে এর বৃদ্ধি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকরা।

সূত্র : ডেইলি মেইল।