কোভিড -১৯ মােকাবিলায় বাংলাদেশ গৃহীত প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

নিউইয়র্ক , ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ : কোভিড -১৯ অতিমারি কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যগত ও আর্থ – সামাজিক চ্যালেঞ্জ মােকাবিলায় বাংলাদেশ গৃহীত ব্যাপকভিত্তিক পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ । বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড . এ কে মােমেন এর সাথে আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত এক ভাচুয়াল বৈঠকে এ প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব ।

দুর্যোগ মােকাবিলায় বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের অতীত রেকর্ডের উদাহরণ টেনে মহাসচিব গুতেরেজ বলেন , কোনাে ঝুঁকি নিরসণের বৈশ্বিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ সর্বদাই শীর্ষস্থানীয় , তাই কোভিড অতিমারি মােকাবিলায় বাংলাদেশের এ ধরণের সাফল্য দেখে আমি মােটেও অবাক হইনি । তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশেষ করে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাঁর সুদৃঢ় । প্রতিশ্রুতির উচ্চকিত প্রশংসা করেন । আলােচনাকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়েই সম্মত হন যে কোভিড -১৯ এর ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচিত করা উচিত । জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রােহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে তার প্রশংসা করেন মহাসচিব । তিনি বলেন , “ আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন , আর তা হলাে রােহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানাে ” । মহাসচিব আরও বলেন , সমস্যাটির সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসংঘ সদা প্রস্তুত রয়েছে । ভাষাণচরে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলাে সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং সেখানে রােহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের মানবিক সহায়তার অনুরােধ জানান । জলবায়ু কর্মসূচিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের যে সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী । তিনি জলবায়ু অর্থায়নকে সচল করতে মহাসচিবের আহ্বানকে স্বাগত জানান ।

 

ক্লাইমেট ভারনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনে এবং এবছর গ্লাজগোতে অনুষ্ঠিতব্য কপ -২৬ সফল করতে জাতিসংঘের সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে মর্মে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী । জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা তাঁর জীবনের যুদ্ধ বলে অভিহিত করে মহাসচিব বলেন , অভিযােজন কৌশল বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত জলবায়ু তহবিলের ৫০ ভাগ বরাদ্দ পেতে দাতাদের বােঝানাের চেষ্টা করবেন তিনি । উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক অভিযােজন কর্মসূচি এবং নদী ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গৃহীত পদক্ষেপসমূহকে অসাধারণ হিসেবে উল্লেখ করেন গুতেরেজ । বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটেগরি থেকে উত্তরিত হতে যাচ্ছে মর্মে সন্তুষ্টির কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ।

 

তবে এক্ষেত্রে উন্নয়ন অংশীদার ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ উত্তরণ পরবর্তী সময়েও যেন নতুন সহায়তা ব্যবস্থার আওতায় সদ্য উত্তরিত দেশগুলােকে বিবেচনা করে সেজন্য তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে মহাসচিবের দপ্তরের পূর্ণ সহযােগিতা প্রত্যাশা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী । উত্তরণ কেবল জিডিপি দ্বারা পরিমাপকৃত কোনাে কারিগরি বিষয় নয় , এটি বিবেচনার ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক নাজুক সূচকসমূহেরও ব্যবহার করা যেতে পারে মর্মে মত প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব । তিনি বলেন , “ উত্তরণ কোনাে শাস্তি হতে পারেনা এটি হতে পারে পুরস্কার । অন্যান্য বিষয়গুলাের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুগপৎভাবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন , শান্তিরক্ষা কার্যক্রম এবং মহাসচিবের পূন – নির্বাচন ইস্যুগুলাে নিয়ে আলােচনা করেন । জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসবে অংশগ্রহণ করতে মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী । ভার্চুয়াল এ বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন ।