চলতি বছর হজে যেতে নিবন্ধনের সময় শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ)। সন্ধ্যা পার হলেও বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার কোটা পূরণ হয়নি। তাই নিবন্ধনের সময় চতুর্থবারের মতো বাড়ানো হলো।
আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত হজের নিবন্ধন করা যাবে বলে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্য কোটা পূরণ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে কোথাও কোথাও নির্বাচনের জন্য ব্যাংকিং কার্যক্রমে সমস্যা হয়েছে। কোথাও কোথাও ব্যাংক সার্ভিস দিতে পারেনি বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। তাই আমাদের সময়টা বাড়তে হচ্ছে। সময় বাড়িয়ে নোটিশ জারি করা হচ্ছে।’
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, এক লাখ ১০ হাজার ৩৪৬ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। এরমধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৬৮৩ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ৬৬৩ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। এখনো কোটা পূরণে বাকি আছে ১৬ হাজার ৮৫২ জন।
পরে নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত হজযাত্রীদের বিশেষ অনুরোধে শেষবারের মতো বর্ধিত করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, নিবন্ধনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক উন্মুক্ত রয়েছে। যারা এখনো পাসপোর্ট পাননি তাদের জন্য এটি একটি অনন্য সুযোগ।
কোটা পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২১ মার্চ হজ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব ব্যাংককে অফিস সময়ের পরেও প্রস্তুতকৃত ভাউচারের অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে তিন দফা হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়। তবে হজের খরচ বেশি হওয়ায় এবার মানুষের আগ্রহ ছিল কম। নিবন্ধন হয়েছে খুবই ধীরগতিতে।
চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। তখন বলা হয়েছিল সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ৪২ হাজার ২৯৩ পর্যন্ত এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক ৭ লাখ ৮ হাজার ৩৬৪ পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যাক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়। সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত চূড়ান্ত ও শেষবারের মতো বর্ধিত করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক আগের সিরিয়াল বহাল রেখে ৪৫ হাজার ৬০৫ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক আগের সিরিয়াল বহাল রেখে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৯০ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। এবার সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। অন্যদিকে, বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এরসঙ্গে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ।
গত বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ হয়। প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা, প্যাকেজ-২ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা। বেসরকারিভাবে হজ পালনে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৪ টাকা। এবারের হজে যাওয়ার খরচ অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।