শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীকেও শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নিয়োগ ও দপ্তর বণ্টনের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন সম্পন্ন হল। এর মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করল আওয়ামী লীগ। টানা চতুর্থ ও পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা।
শপথ নেওয়ার আগেই বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ৩৭ সদস্যের এই মন্ত্রিসভায় বিদায়ী মন্ত্রিসভার ১৭ জনের স্থান হয়েছে। অর্থাৎ নতুন মন্ত্রিসভায় ১৯ জনই নতুন মুখ। আগের মন্ত্রিসভার ১৪ জন মন্ত্রী, ১২ প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ৬ মন্ত্রণালয়-বিভাগ
নতুন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।
যে মন্ত্রী যে দপ্তর পেলেন
১. আ ক ম মোজাম্মেল হক- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
২. ওবায়দুল কাদের- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়
৩. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন- শিল্প মন্ত্রণালয়
৪. আসাদুজ্জামান খান- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৫. দীপু মনি- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
৬. মো. তাজুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
৭. আনিসুল হক- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
৮. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৯. সাধন চন্দ্র মজুমদার- খাদ্য মন্ত্রণালয়
১০. ফরহাদ হোসেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
১১. ফরিদুল হক খান- ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
১২. মহিবুল হাসান চৌধুরী- শিক্ষা মন্ত্রণালয়
১৩. স্থপতি ইয়াফেস ওসমান- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
১৪. মুহাম্মদ ফারুক খান- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
১৫. আবুল হাসান মাহমুদ আলী- অর্থ মন্ত্রণালয়
১৬. মো. আব্দুস শহীদ- কৃষি মন্ত্রণালয়
১৭. র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
১৮. মো. আব্দুর রহমান- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
১৯. নারায়ণ চন্দ্র চন্দ- ভূমি মন্ত্রণালয়
২০. আব্দুস সালাম- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
২১. মো. জিল্লুল হাকিম- রেলপথ মন্ত্রণালয়
২২. সাবের হোসেন চৌধুরী- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
২৩. জাহাঙ্গীর কবির নানক- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়
২৪. নাজমুল হাসান- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
২৫. সামন্ত লাল সেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
প্রতিমন্ত্রীরা কে কোন দপ্তর পেলেন
১. নসরুল হামিদ- বিদ্যুৎ বিভাগ
২. জুনাইদ আহমেদ পলক- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
৩. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
৪. জাহিদ ফারুক- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
৫. সিমিন হোসেন (রিমি)- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়
৬. মোহাম্মদ আলী আরাফাত- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
৭. মো. মহিববুর রহমান- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়
৮. কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
৯. রুমানা আলী- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
১০. শফিকুর রহমান চৌধুরী- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
১১. আহসানুল ইসলাম (টিটু)- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের ফলাফল পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল–জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে শপথ নেন নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। শপথ শেষে অনুষ্ঠিত সংসদীয় দলের সভায় শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়। বুধবার সন্ধ্যার পর বঙ্গভবনে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সিদ্ধান্ত দেন। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে সম্মতি দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন।