সাংবাদিকতার শখ হলো। জনপ্রিয় দৈনিক পরিবর্তনের সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদুর রহমানের সহযোগীতায় সর্বজন শ্রদ্ধের ব্যক্তিত্ত প্রয়াত মীর মনিরুজ্জামানের সাথে পরিচয়। শখের বসে লেখার জগতে এসে তিনি ( মনিরুজ্জামান) ছাড়াও বরিশাল মিডিয়ার ভুবনে আমি এক হতভাগা!
অফিসে আসা যাওয়া করতেই ভাড়া গুনতে গুনতে শখের লেখনির সাদ কমে যাচ্ছে। পালমল ব্যান্ডসন সিগারেট আর এককাপ চায়ের বিল কে দেবে! শাহিন শুমন,আলামিন, বায়জিদরা পত্রিকার ছাপানোর সব কাজ যে যার ইচ্ছা শক্তি দিয়ে রিতিমত চালিয়ে যাচ্ছেন।
রিপোর্ট লেখার পর সবাই যার যার বাসায় চলে যাচ্ছে। আর আমি মীর মনির ভাইয়ের সংগে রাত জেগে আছি। মনির ভাই একদিন প্রশ্ন করেন রাতে কোথায় খাই। উত্তরে শাহিন শুমনের নাম বলাতে ভাই হাসি দিলেন। মনে মনে শাহিনকে ধন্যবাদ দিলেও নিজেকে বিব্রতবোধ করতেন। কারোন আমার খাবারের দায়িত্ব তার।
দিনরাত সংবাদের পিছনে ছুটে বিভিন্ন প্রগ্রামে যেতে যেতে ক্লান্ত আমি। অফিসে থাকার সুভাধে নিউজ এডিটের কাজগুলোও বেশির ভাগ সময় আমিই করতাম। ভুল হলে শাহিনের প্যাদানি আর মনির ভাইর গালমন্দে হতবাক হয়ে যাই।
কাজের ফাঁকে শাহিন কম্পিউটারে ভালো লাগার কিছু গান শুনাতো। গভীর রাতের সেই গানে পাশেই নিস্তব্দ হয়ে বসে থাকা মনির ভাই শুনতেন আবার ডাকও দিতেন। ছাপাখানা থেকে প্রত্রিকা না আসা পর্যন্ত চেয়ারে বসে থাকতেন। রাত চারটা। এটা যেনো মনির ভাইর নিত্তদিনের লুকোচুরির খেলা।
অর্থসংকট। সংবাদ কর্মিরা বেতন পাচ্ছে না। আবার কোথাও থেকে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অর্থের লেনদেনের খবর আসলে রক্ষা নেই। মুখের মধুর ভাষা তখন পাথরে পরিনত হয়ে যায়। শুধুকি তাই,অনেক টর্চারিং কথা শুনে অনেক সংবাদ কর্মি তাকে ছেড়ে অন্যত্র ছুটে গেলো।
আমি,শাহিন,বায়জিদ, আতিয়ার আলামিনেরাই পড়ে রইলাম মনির ভাইর শাসনের ছাউনিতে। কত অফিস থেকে অফার আসলো গ্রহন করলাম না। কারোন সাংবাদিকতার হাতে ক্ষড়ির নায়ক যে মনির ভাই। নিরক্ষর সোহেল আহমেদ কে বরিশালে লেখনির জগতে হাইলাইটস করেছেন এই মীর মনির।
কে চিনতো আমাকে? সমাজের বিভিন্ন রাজনিতীতে পাতি নেতাকর্মীরা যখন বড় নেতার হাতের পরশ পেলেই নিজেকে সমাজপতি ভাবা শুরু করে দেয়। সেখানে আমার স্থান নেই। কারোন বুজ হওয়ার পর দেখেছি করুন বাস্তবতা। কঠিন মুহুর্তে আমি রমনীর বিশাল প্রতারনার অপদার্থ। নিস্তব্দতা আমায় জায়গা থেকে নড়তে দেয়না।
মীর মনির ভাইকে প্রায় সময় জীবনের এ করুন চিত্রের কথা বলতাম। খুব সাহস আর উপরে ওঠার উৎসা দিয়ে ছিলেন। শুধু পারতেন না অর্থ দিয়ে সহয়তা করতে। তবে ভালো কোন প্রগ্রামে আমাকে অংশ নিতে একটু নজর দিতেন। একটি সরকারি চাকুরির গুজব। মনির ভাইর একটা ফোনই পারত চাকুরিটা পাওয়ার প্রধান সহয়ক। করলেন না। শহরের সবাই তাকে খুব শ্রদ্ধা ভক্তি করে। হাজার সাংবাদিকের ভিড়ে একটা আলাদা ইমেজের ( সততার) পরিচিতি মীর মনিরের জীবনে প্রধান মুল্যবান সম্পদ হয়ে ওঠে।
শুধু কি সাংবাদিক জগতে তার সুনাম? তিনি একজন সেচ্ছাসেবী সংগঠক। নিজেকে অর্থ খরায় রেখেও মানব সেবায় নিয়োজিত রাখতেন। ফলে একটু সুপারিশ পাওয়া হয়নি তার কাছ থেকে। ছোট হতে চাইতেন না। কারো কাছেই তার অনুরোধ বিনয় লক্ষ করিনি। তাও আবার নিজ প্রয়োজনে।
তবে কোনো সাংবাদিক সন্ত্রাসী দ্বারা আক্রান্ত হলে রাজপথে নামতেও পিছুপা হননি। থেকে ছেন অগ্রভাগে। যেখানেই দুর্নীতির খবর সেখানেই মনির ভাই শেষ লড়াই। হারব না জিতবো এটাই ছিলো তার স্লোগান। বরিশাল সেটেলমেন অফিস প্রধানে বিরুদ্ধে সংবাদ অতপর ভুমি কর্তাদের বরিশাল থেকে আউট জ্বলন্ত প্রমান। অনেক সংবাদ কর্মিকে কিনতে পারলেও মীর মনিরের সাংবাদিকদের ব্যার্থ ভুমি কর্মকর্তা।
পত্রিকার বাহিরে নিজেকে লুকিয়ে রাখতেন আড়ালে। নিজের অর্থনৈতিক খড়া জানাতেন কাউকে। জানতে চাইতাম কেনো এমন করছেন। স্বাস্থ্যেরর দিকে বিষেশ যত্ন নিতে বেশ কার্পন্য করতেন। ডিজিটাল যুগের সময়ে তিনি একটি ক্যামেরা সেট ব্যবহার থেকেও বিরত।
শখ আছে সামর্থ্য নেই। নাকি সামর্থ্য ছিলো বিলাসীতা নয়? কদিন পরই কিনবো বলে প্রায় সময় আমাকে শান্তনা দিতেন। আমি অবশ্য পিতা সমতুল্য অধিকার পেয়ে তাকে বিভিন্ন সময় একটু বারাবারি করতাম। রাগ করতেন না। হাসি মুখে কিভাবে মানুষের মাঝে স্নেহ ভালোবাসায় সিক্ত হলেন তা মনে হয় নিজেও উপলব্দি করতে পারেন নি।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com