কী অপরাধ শিশুটির!

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

যে বয়সে খেলনা নিয়ে খেলার বা বই হাতে মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাবার কথা ছিল মাহির (৮), সেই বয়সে অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতে গিয়ে বর্বর নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে।

শুক্রবার রাতে মুমূর্ষু অবস্থায় ফতুল্লার পূর্ব ইসদাইর এলাকার একটি বাড়ি থেকে এলাকবাসীর সহায়তায় মাহিকে উদ্ধার করে পুলিশ। খুন্তির ছ্যাঁকায় ঝলসে গেছে তার শরীর। মাহিকে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগে আতাউলতাহ ও তার স্ত্রী উর্মি আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় আতাউল্লাহর প্রতিবেশি জাকির হোসেন ওই দম্পতিকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফতুলতা মডেল থানায় একটি মামলা  করেছেন।

ছোট্ট মাহির হাতে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, মারধর এবং শরীরে গরম পানি ঢেলে বর্বর নির্যাতন করা হতো। ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ মাহিকে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে তাদের হেফাজতেই রেখেছে। রোববার আদালতে তার জবানবন্দি গ্রহণ করার কথা রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ইলিয়াছ হোসেন বলেন, হতভাগ্য মাহিকে গাজীপুরের আল আমীন ও হাসিনা আক্তার নামে এক দম্পত্তি দত্তক নিয়ে লালন পালন করে। ৩ মাস আগে মাহিকে আতাউলতাহর বাসায় মাসিক ২ হাজার টাকা বেতনে গৃহপরিচারিকার কাজে দেওয়া হয়। এই বাসায় কারণে অকারণে তার ওপর চালানো হতো নির্মম নির্যাতন। শুক্রবার মধ্যরাতে আশপাশের লোকজন আতাউলতাহর ফ্ল্যাট থেকে বাচ্চা শিশুর চিৎকার শুনে তার ফ্ল্যাটে গিয়ে কারণ জানতে চাইলে সে ও তার স্ত্রী উর্মি প্রতিবেশিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।

ওই সময় প্রতিবেশিরা ফতুল্লা মডেল থানাকে ঘটনাটি জানালে স্থানীয় এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ আতাউল্লাহর বাসা থেকে গুরুতর আহতবস্থায় মাহিকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়।

এসআই ইলিয়াছ আরও জানান, মাহির পালক মা হাসিনা আক্তারকে টেলিফোন করা হলেও তারা আসছি বলে শনিবার বিকেল পর্যন্ত থানায় আসেনি।

আতাউল্লাহ সর্ম্পকে পুলিশ জানিয়েছে, সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হলেও এখন আতাউল্লাহ বেকার। আতাউল্লাহ ও উর্মি উভয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। উর্মির আগের সংসারে ২ সন্তান এবং আতাউলতাহর আগের সংসারে ৩ সন্তান রয়েছে। তবে তারা বিয়ের পর থেকে আলাদা বাসা নিয়ে বসবাস করছে। উর্মি বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। শনিবার তাদের আদালতে পাঠালে ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মঞ্জুর কাদের বলেন, সঠিক সময়ে এলাকাবাসী খবর দেওয়ায় মাহিকে জীবিত উদ্ধার করা গেছে। না হলে যে ধরনের নির্যাতন তাকে করা হয়েছে তাতে তার জীবন বিপন্ন হতে পারতো।