কীর্তনখোলার তীরে গড়া শহীদ মিনারে শিশু-কিশোরদের শ্রদ্ধা

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলা নদী তীরের রসুলপুর চরে শহীদ মিনার গড়ার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চরের সুবিধাবঞ্চিত আড়াই শতাধিক শিশু-কিশোররা ১৫টি দলে ভাগ হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এরপর চরের শিশু-কিশোররা শহীদ মিনার গড়ার কাজে লেগে পড়ে। কাদামাটি, কলাগাছ, ইট, বালি, কাঠ, ককশিট, বাঁশের কঞ্চিসহ হাতের কাছে যা পেয়েছে তাই দিয়ে ১৫টি শহীদ মিনার গড়ে তারা। এরপর দৃষ্টিনন্দন রূপ দিতে রং, রঙিন কাগজ ও নানা রঙের ফুল দিয়ে প্রতিটি মিনার মুড়িয়ে দেওয়া হয়।

কয়েকটির চারপাশে সুতা টানিয়ে তাতে রঙিন কাগজ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাদের এ কাজে উৎসাহ জোগানোর পাশাপাশি সহায়তা করেছেন দাদি, নানি, মা, চাচি ও বড় ভাই-বোনেরা।

 

অস্থায়ী শহীদ মিনারগুলো গড়তে সময় লেগেছে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। তবে শিশু-কিশোরদের হাতে গড়া প্রত্যেকটি শহীদ মিনারে মিশে রয়েছে তাদের শ্রদ্ধা আর অগাধ ভালোবাসা। পরে সেই শহীদ মিনারে তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে এই শহীদ মিনার গড়ার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। গত ৯ বছর ধরে রসুলপুর চরে এ আয়োজন করে আসছে ছাত্র সংগঠনটি।

শহীদ মিনার গড়ার পাশাপাশি চরের সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি, সংগীত, কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর নানা অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের উৎসব-উচ্ছ্বাসে মুখরিত ছিল পুরো রসুলপুর চর এলাকা। দুপুর ২টার দিকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

 

অনুষ্ঠানের আয়োজক সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, ভাষার জন্য, মাতৃভাষা বাংলার জন্য বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি। তাদের এই মহান আত্মত্যাগের ইতিহাস জানাতে ও শহীদদের স্মরণে গত ৯ বছর ধরে রসুলপুর চরে শহীদ মিনার তৈরিসহ নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

শহীদ মিনার তৈরি প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে মহিনের দল। দ্বিতীয় মেহেরুনের দল এবং তৃতীয় হয়েছে হৃদয়ের দল। এছাড়া সেরা ১০ শহীদ মিনার তৈরিকারী দল ও চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়।