১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ফুসলিয়ে নিয়ে যৌন ব্যবসার জন্য বিক্রি করে দেন এলাকার এক যুবক। কিশোরীর স্বজনরা তা জানতে পেরে একটি বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে। এরপর স্থানীয় সমাজপতিদের কাছে ঘটনাটি জানিয়ে ওই যুবকের বিচারের দাবি জানান কিশোরীর স্বজনরা।
সমাজপতিরা হাসান শরীফ নামের ওই যুবককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ বার জুতাপেটা করার নির্দেশ দেন। আর কিশোরীর চরিত্র খারাপ উল্লেখ করে তাকেও ১০ বার জুতা দিয়ে পেটানোর নির্দেশ দেন।
গতকাল মঙ্গলবার মাদারীপুর পৌরসভার তিন আওয়ামী লীগ নেতা এই রায় দেন।
কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১৮ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে ফুসলিয়ে নিয়ে যান এলাকার হাসান শরীফ। এরপর যৌন ব্যবসা করানোর জন্য তাকে তামান্না নামের এক নারীর কাছে বিক্রি করে দেন হাসান। মাদারীপুর সদর উপজেলার একটি এলাকা থেকে গত শুক্রবার ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে তার পরিবার।
পরে কিশোরীর পরিবার স্থানীয়দের জানালে আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে সালিশ-মীমাংসায় বসেন সমাজপতিরা। সালিশে ছিলেন মাদারীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর আইয়ুব খান, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজাম খান, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা সামসুল হক খান, স্থানীয় প্রভাবশালী সেলিম মীরা, খবির খান, আকলিমা বেগমসহ শতাধিক লোকজন।
আইয়ুব খান, মুজাম খান, সামসুল হক খান ওই কিশোরীকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বার জুতা দিয়ে পেটানোর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে হাসান শরীফকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ বার জুতাপেটা করার নির্দেশ দেন।
নির্দেশ পেয়ে সালিশে উপস্থিত আকলিমা বেগম নামের এক নারী ওই কিশোরীকে জুতাপেটা করেন। ঘটনার পর থেকে কিশোরীর পরিবার রয়েছে নিরাপত্তাহীনতায়। লোকলজ্জার ভয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে পারছেন না তারা।
ওই কিশোরীর ভাই বলেন, ‘আমার বোনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিক্রি করে দেয় হাসান। এরপর আমরা বোনকে উদ্ধার করি। পরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার নামে আমার বোনকে জুতাপেটা করেছে।’
কিশোরীর ফুপু বলেন, ‘আমার ভাই গরিব মানুষ, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়। আমাদের সঙ্গে ওরা অবিচার করেছে। আমরা ওদের বিচার চাই।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুজাম খান বলেন, ‘মেয়ের চরিত্র খারাপ। সালিশে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আমরা জুতাপেটা করেছি।’