প্রায় ছয় মাস পর জম্মু-কাশ্মীরে প্রিপেইড মোবাইলে ভয়েস কল ও এসএমএস সেবা চালু করেছে ভারত। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রিপেইড মোবাইল সংযোগে ভয়েস কল এবং এসএমএস সেবা পুনরায় চালু করা হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্বশাসন বাতিলের পর দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার সেখানে মোবাইল সংযোগসহ সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয়। বিভিন্ন ধরনের কঠোর বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ার অংশ হিসেবে কাশ্মীরে প্রিপেইড মোবাইল সংযোগ চালু করা হল বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জম্মুর জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা রোহিত কানসাল বলেছেন, জম্মুর ১০টি জেলার পাশাপাশি কাশ্মিরের বান্দিপোরা ও কুপওয়ারা জেলায় প্রিপেইড মোবাইল সিমে ২জি ইন্টারনেট ও আরও কিছু সেবা পুনর্স্থাপন করা হয়েছে। সরকার অনুমোদিত কিছু শ্বেত তালিকাভূক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশে কড়াকড়ি আগের মতোই থাকবে।
গত সপ্তাহে ২জি ইন্টারনেট সেবা পুনর্স্থাপনের ঘোষণা দেয় জম্মুর সরকার। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় টেলিকম অপারেটর কোম্পানিগুলো জম্মুতে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করতে পারেনি। কানসাল বলেন, প্রিপেইড সিমে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার আগে টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদেরকে সাবস্ক্রাইবারের পরিচয়পত্র যাচাই করতে হবে।
গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের বিশেষ অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। সেই সময় থেকে ভূস্বর্গখ্যাত এই উপত্যকা যোগাযােগ বিচ্ছিন্ন ছিল; যা বিশ্বে দীর্ঘসময় ধরে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার রেকর্ড। জম্মু-কাশ্মীরের এই যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা নিয়ে বিভিন্ন সময় সমালোচনা করে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।
গত সপ্তাহে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার কাশ্মীর উপত্যকায় সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অফিসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালুর ঘোষণা দেয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়।
জম্মু-কাশ্মীরে আংশিকভাবে মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ পুনর্স্থাপনের এই সিদ্ধান্ত এল দেশটির সুপ্রিম কোর্টে গত সপ্তাহে এক শুনানির পর। শুনানিতে জম্মু-কাশ্মীরে আরোপিত সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা দ্রুত পর্যালোচনার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। এ সময় আদালত বলেন, অবাধ চলাচল, ইন্টারনেট এবং মৌলিক স্বাধীনতার স্থগিতকরণের মাধ্যমে ক্ষমতার নির্বিচার চর্চা চলতে পারে না।
সূত্র : এনডিটিভি।