কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভে উত্তাল আসাম, গুলিতে নিহত ৩

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

ভারতের সংসদের উভয় কক্ষে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল আসামে কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নামা জনতার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে রাজ্যের গুয়াহাটিতে পুলিশের গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত ও আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বুধবার রাতে ভারতের রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পর দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যে কারফিউ জারি করা হয়। এ বিলের প্রতিবাদে আসামের অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু) এবং কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস) বিক্ষোভের ডাক দেয়।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে বুধবারই জ্বলে ওঠে আসাম। সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন গতকাল থেকে। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু) এবং কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস)। সাধারণ মানুষকে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছে তারা। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কারফিউ উপেক্ষা করে রাজপথ দখলে নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। বেলা ১১টায় গুয়াহাটির লতাশীল ময়দানে জমায়েতের ঘোষণা দেয়া হয়।। এ জন্য সবাইকে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানায় তারা।

বিক্ষোভ থামাতে রাজ্য পুলিশ বিভিন্ন স্থানে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। গুয়াহাটি পুলিশের প্রধানকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আসামের ১০ জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে রাজ্যের অন্তত চারটি স্থানে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এসব এলাকায় সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের উত্তরপূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে।

আসাম ও ত্রিপুরার মধ্যে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে; থমকে গেছে আকাশপথও। গুয়াগাটি ও দিব্রুগড়গামী বিভিন্ন সংস্থার বিমানের ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামেশ্বর তেলিসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার বাসভবনে হামলা করেছে বিক্ষোভকারীরা। তবে আসামে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে একটি টুইট করেন। টুইটে তিনি বলেন, আপনাদের অধিকার কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।