অবশেষে কেটেই ফেলতে হলো ত্রিভুবনে বিমান দুর্ঘটনায় আহত কবির হোসেনের ডান পায়ের অর্ধেকটা। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তের ১৬ দিনের মাথায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার পা কেটে বাদ দিতে হলো। পঙ্গুত্ব নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে হবে মাদারীপুরের শিবচরের কমমেটিক ব্যবসায়ী কবিরকে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কবির হোসেনকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে অস্ত্রোপচার করে তার পায়ের অংশবিশেষ কেটে বাদ দেওয়া হয়। রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা অস্ত্রোপচার টেবিলে ছিলেন তিনি। কবির হোসেনের পাশে থাকা তার ছেলে শাওন মাদবর সিঙ্গাপুর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নেপালে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে কবির হোসেনের পায়ে অস্ত্রোপচার করা করেছে। আমরা কবির হোসেনের বিষয়ে এখানে থাকা অবস্থায় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরাও তেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তার বাঁ পায়ের ব্যাপারেও সেখানকার চিকিৎসকরা পরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
মুঠোফোনে শাওন মাদবর সাংবাদিকদের জানান, পায়ের অংশবিশেষ কেটে বাদ দেওয়ার পরও শঙ্কামুক্ত নন তার বাবা। শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে। এখন কথাও বলতে পারছেন না। কিছু খেলেই বমি হচ্ছে। শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছেন, যা ইশারা দিয়ে বোঝাচ্ছেন তিনি। তবে পরিবারের চাওয়া, যেভাবেই হোক তিনি বেঁচে থাকুন স্ত্রী-সন্তান ও পরিজনদের মধ্যে।
কবির হোসেনের স্ত্রী হেনা বেগম বলেন, স্বামী পঙ্গু হয়েছে, এই কষ্ট মেনে নিয়েছি। সে সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক, এটিই আমার শেষ চাওয়া।
গত শনিবার সকালে বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্তে পরিবারের সম্মতিক্রমে ও ইউএস-বাংলার তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার রাত ১টার দিকে কবির হোসেনকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগ পর্যন্ত তিনি ঢামেক হাসপাতালের পুরনো ভবনের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১২ মার্চ ৭১ জন আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। এ ঘটনায় নিহত ৫০ জনের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি।