চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) এপ্লাইড ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের গবেষকেরা কাঁঠাল থেকে তৈরি করেছেন প্রোটিনসমৃদ্ধ চিপস। এই চিপস ১০০ গ্রামের প্যাকে পাওয়া যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ফটকের ‘সিভাসু ফুড আউটলেট’-এ।
সম্প্রতি সিভাসু ফুড আউটলেটে প্রোটিনসমৃদ্ধ এই চিপসের যাত্রা শুরু উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কাঁঠালের চিপস তৈরির এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়েছেন সিভাসুর এপ্লাইড ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মজিবুল হক জুয়েল।
মজিবুল হক জুয়েল বলেন, ‘আমাদের খাদ্য তালিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে প্রোটিন। বাজারে প্রচলিত যেসব চিপস পাওয়া যায় তা মূলত কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ। কাঁঠাল যেহেতু প্রোটিনসমৃদ্ধ ফল, তাই চিপসের মাধ্যমে মানুষের প্রোটিনের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করার প্রয়াসে আমাদের এ উদ্যোগ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাঁঠালের অপচয় রোধ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাঁঠাল একটি দ্রুত পচনশীল মৌসুমি ফল। এই চিপস তৈরির ফলে কাঁঠালের অপচয় যেমন রোধ হবে, তেমনি সারা বছরব্যাপী কাঁঠালের পুষ্টিও পাওয়া যাবে। অন্যান্য কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ চিপসে যেখানে অ্যাক্রিলামাইড (কারসেনোজেনিক পদার্থ-যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়) থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি, সেখানে এই কাঁঠালের চিপসে অ্যাক্রিলামাইড থাকার সুযোগ একেবারেই কম।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল বলেন, ‘কাঁঠাল একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফল। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে কাঁঠাল খাওয়ার প্রতি অনীহা দেখা যাচ্ছে। আশাকরি, কাঁঠালের চিপসের মতো এমন আরো নতুন নতুন প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে এই পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফলটি মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। ’
ফুড সায়েন্স ও টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফেরদৌসি আকতার বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি দেশের মানুষের পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। কাঁঠাল থেকে প্রোটিনসমৃ্দ্ধ চিপস তৈরি আমাদের সেই প্রচেষ্টারই অংশ। আশাকরি, ভবিষ্যতেও আমরা উদ্ভাবনী ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের মানুষের পুষ্টির নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখতে পারবো।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ লুৎফর রহমান, ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেখ আহমাদ-আল-নাহিদ, পরিচালক (ইনস্টিটিউট অব ফুড সেফটি অ্যান্ড নিউট্রিশন) অধ্যাপক ড. শিরীন আক্তার, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলি বিশ্বাস এবং পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) অধ্যাপক ড. এস. কে. এম. আজিজুল ইসলাম।