কলেজছাত্রীকে বিয়ে করে প্রতারণা, সেই এএসআই’র বিরুদ্ধে মামলা

:
: ৭ years ago

শেরপুর সদর উপজেলার পূর্ব আলিনাপাড়া গ্রামে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আরিফুজ্জামান সোহাগের বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে শুক্রবার থেকে আমরন অনশন করছেন এক কলেজছাত্রী।

এ ঘটনায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আরিফুজ্জামান সোহাগ (৩০) ও তার পরিবারের ৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাটি করা হলে বিচারক সাইফুর রহমান তা আমলে নিয়ে এএসআই সোহাগসহ ৬ জনকে আগামী ১৮ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারির আদেশ দেন।

মামলার অপর ৫ আসামি হলেন- সোহাগের মা শিরি বেগম (৫০), চাচা মঞ্জু মিয়া (৪২) ও মিন্টু মিয়া (৪৬), আত্মীয় হাসি বেগম (৩৪) এবং শিরি আক্তার (৩৮)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার পূর্ব আলিনাপাড়া (খালপাড়) গ্রামের মৃত আনিছুর রহমান দুলালের ছেলে পুলিশের এএসআই মো. আরিফুজ্জামান সোহাগ (এসবি ঢাকা, বিপি-৮৮০৭১২৮৭৪৭) পার্শ্ববর্তী আন্ধারিয়া নয়াপাড়া গ্রামের ব্যাংকার মিজানুর রহমানের মেয়ে শেরপুর সরকারী কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার মেরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাঙ্গাইলে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গোপনে বিয়ে করেন।

কিন্তু আরিফুজ্জামানের ছোট বোনের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার শর্তে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে মেলামেশা করে তারা। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থান থেকে ওই শিক্ষার্থীর বিয়ের প্রস্তাব এলে তিনি আরিফুজ্জামানকে তাদের বিয়ের বিষয়টি সবাইকে জানাতে বলেন এবং শর্তানুযায়ী স্ত্রী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি চান। কিন্তু আরিফুজ্জামান বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে মোবাইলফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ এসএমএস পাঠান।

এদিকে এএসআই সোহাগ নকলা উপজেলার কামারপট্টিতে নতুন করে বিয়ের জন্য মেয়ে দেখে বিয়ের দিন ঠিক করেন। এ খবর পেয়ে ওই শিক্ষার্থী মোবাইলের মাধ্যমে আরিফুজ্জামানকে বুঝালেও তা না মানেনি। বরং বিয়ের নির্ধারিত তারিখের আগেই নকলার ওই মহল্লায় ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিয়ে করতে যান এএসআই আরিফুজ্জামান।

বিষয়টি জানতে পেরে ওই কলেজছাত্রী শুক্রবার বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়ে বিষয়টি কনে পক্ষকে জানান। ফলে ওই বিয়ে ভেঙে যায়। এ সময় কৌশলে এএসআই সোহাগ বিয়ে বাড়ি থেকে সরে পড়েন। পরে ওই কলেজছাত্রী এএসআই আরিফুজ্জামানকে না পেয়ে শুক্রবার বিকেল থেকে তাদের গ্রামের বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে অনশন শুরু করেন।

খবর পেয়ে জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া ও জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি জয়শ্রী দাস লক্ষ্মীসহ মানবাধিকার কর্মী ও নারী নেত্রীরা থানায় ছুটে যান।

পরে ওই ছাত্রীকে নিয়ে থানায় মামলা করতে যান তারা। কিন্তু এএসআই সোহাগের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না নিয়ে পরদিন অনশনকারী ওই শিক্ষার্থীকে তার মায়ের জিম্মায় দেয় পুলিশ। অবশেষে এ ঘটনায় এএসআই সোহাগসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার মেরি।