কর্মী থেকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠা সাদিক আবদুল্লাহর গল্প

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago
সাদিক আবদুল্লাহ

সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। অবশ্য ইতোমধ্যে নামটির খ্যাতি বরিশাল’র পাড়া-মহল্লা, নগর ছাড়িয়ে এখন দেশও সমধিক উচ্চারিত। কোন বৈজ্ঞানিক আবিস্কারে নামটি যুক্ত না থাকলেও স্বীয় প্রজ্ঞা আর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার মাধ্যমে বরিশালের গণমানুষের হৃদাসন জয় করেই আজ নামটির খ্যাতি বরিশালের গন্ডি ছাড়িয়ে দেশের মাটিতেও সমানভাবে সমাদৃত।

ছিলেন বরিশাল নগরীর একটি ছোট্ট মহল্লায়। খেলাধুলা ও সংগীত চর্চায় শৈশবে নিজেকে জড়িয়ে রাখলেও নগরবাসীর অনেকেই তখন জানতো না সাদিক আব্দুল্লাহর নাম। ২০১৪ সালে শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্থান ঘটে দক্ষিণবঙ্গের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বড় ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এর পর ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক। বর্তমানে বরিশালের রাজনীতিতে ইতিহাস।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামীলীগের মননীত প্রভাবশালী মেয়র মনোনয়ন পার্থী তিনি। আর প্রভাবশালী মেয়র প্রার্থী দাবীদার হবেন না কেনো? বরিশালে প্রধান মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভায় বিপুল লোক সমাগম ও  সাজসজ্জাকরণ’র মাধ্যমে নিজের যোগ্যতার জানান দেন যথারীতি এ নেতা। আর এজন্যই নগরবাসী ভালবেসে তাদের চিরচেনা এই নেতার নামের পাশে কখনো জননন্দিত কখনো যুবরত্ন শব্দটিও যুক্ত করে দেন অবলীলায়। আর এভাবেই লাখো মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া সেদিনের সেই সাদিক আজ নগর-দেশে প্রিয়পাত্র।

বর্তমানে বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ লড়ছেন বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। কবিতার দুটি লাইনের সাথে এই রাজনীতিবিদের যৌবনকালের অদ্ভূতরকম মিল আছে। “এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়”। ঠিক এই লাইনটির মতোই সাদিক নিজের যৌবনকালকে প্রথাগত চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিরাপত্তার চাদরে মোড়া ঘরসংসার করার জীবন বেছে নেননি। তিনি বেছে নিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর দৃপ্ত শপথ। লড়াইয়ে রক্তেভেজা রাজপথ, কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠের অনিশ্চিত এক জীবন।

বরিশালের রাজনীতিবিদরা মনে করেন যাদের জীবন শুধু সংগ্রামের, ত্যাগের; যারা দিতে জানে বিনিময়ে কিছু নিতে জানে না প্রকৃত অর্থে তারাই মানুষ। যাদের অনুসরণ করলে প্রকৃত মানুষ হওয় যায়। সে রকম একজন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালের বর্তমানে খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ। নানা ঝড়ঝাপ্টার মাঝেও দলীয় আদর্শে তিনি অবিচল থাকেন। তাইতো দলীয় নেতা কর্মীদের নিকট হয়ে উঠেন বড় অবলম্বন।

নগরভবন ঠিকানা না হলেও বর্তমানে মহানগরীর মানুষ এখন তাকে ‘ভবিষৎ মেয়র’ বলেই সম্বোধন করে। সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে ছুটে যায় তার কাছে। সাদিকও নিরাশ করেন না বিপদে পড়া তার প্রিয় নগরবাসীকে। ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে মরহুম শওকত হোসেন হিরনের পরাজয়কে সাদিক আব্দুল্লাহ একটি অভিজ্ঞতা হিসেবেই নিয়েছেন।

 

মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর এখন সকাল-সন্ধ্যা কাটে সাধারণ মানুষকে নিয়ে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাসার নিচতলার ড্রইংরুমে দেখতে পান অপেক্ষমাণ মানুষের জটলা। কেউ এসেছেন সমস্যা নিয়ে, আবার কেউ বিচারপ্রার্থী হতে।

সাদিক সবার কথা শোনেন, সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন কিছুতেই বাদ পড়ছেন না সাদিকের। তাকে ছাড়া যেন নগরবাসীর কোনো অনুষ্ঠানই পূর্ণতা পায় না। সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড শেষে মধ্যরাতে যখন সাদিক ফেরেন তখনো মানুষের আনাগোনা থাকে নগরীর কালীবাড়িস্থ বাসায়।

সাদিক মনে করেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার দাদা, বাবা সবাই বরিশালের মাটিতে রাজনীতি করেছে। আমিও তাদের বাইরে নই। আমি কোন কুট রাজনীতি বুঝি না। ওই রাজনীতি করতেও চাই না। দেশ ও বরিশালের উন্নয়নের জন্য কোন কাজই আমি ভয় পাই না। আমি জনগনের মাঝেই থাকতে চাই। জনগনের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিয়েই রাজনীতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের ভালোবাসাকে জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন মেনে নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চাই মানুষের কল্যাণে, দলের কল্যাণে।