দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৮ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ২০৯ জনের। একই সময়ে নতুন করে আরও তিন হাজার ৯৯ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯০ হাজার ৬১৯ জনে।
সোমবার (১৫ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি ৫৮টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ৭৩৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৩৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো পাঁচ লাখ ১৬ হাজার ৫০৩টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৯৯ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯০ হাজার ৬১৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ২০৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টা যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৩৪ হাজার ২৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব সাতজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঁচজন, ষাটোর্ধ্ব ১৫ জন এবং সত্তরোর্ধ্ব পাঁচজন রয়েছেন। ১৮ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ছয়জন সিলেট বিভাগের এবং একজন করে রংপুর ও বরিশাল বিভাগের। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৫ জন, বাসায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের এবং হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়েছে দুজনকে।
গত রোববারের (১৪ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ১৪ হাজার ৫০৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ১৪১ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও বেড়েছে মৃত্যু। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ৪৬ জনের এবং সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের রেকর্ড তিন হাজার ৪৭১ জনের। সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্তের দুটি রেকর্ডের কথাই জানানো হয় গত ১২ জুনের বুলেটিনে।
সোমবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগী বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৫৩৬ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৮৪৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৯৫ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৮১৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১০ হাজার ২৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৯২২ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ৬৭ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৬১ হাজার ৬৮৯ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬১ হাজার ৬৬৯ জন।
দেশে কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
এখন করোনাভাইরাসের ছোবলে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা চার লাখ ৩৫ হাজার প্রায়। তবে ৪১ লাখ ৩৪ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।