করোনায় পেছাবে না চসিক নির্বাচন : সিইসি

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

করোনাভাইরাসের কারণে ইংল্যান্ডের স্থানীয় ও মেয়র নির্বাচন এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই চলছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠানের তৎপরতা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের কারণে চসিক নির্বাচন পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘আমরা করোনা নিয়ে কথা বলেছি, মতামত জানতে চেয়েছি। মোটামুটি এ পর্যন্ত যে পরিস্থিতি, তাতে এ ভাইরাসকে জাতীয় পর্যায়ে দুর্যোগপূর্ণ হিসেবে সরকার ঘোষণা করেনি। সে জন্য নির্বাচন বন্ধ করার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো আসেনি।’

ভোটের দিন অফিস খোলা, গাড়িও চলবে

সিইসি বলেন, ‘চট্টগ্রামের নির্বাচন নিয়ে আমরা অতিরিক্ত কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। নির্বাচনের দিনে আমরা সাধারণত সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেই। কিন্তু যেহেতু ২৬ থেকে ২৯ মার্চ টানা কয়েক দিনের বন্ধ। এ অবস্থায় আমরা যদি নির্বাচনের দিন অফিস বন্ধ রাখি তাহলে চারদিন-পাঁচদিনের একটি ছুটির ফাঁদে পড়বে ভোটাররা। তখন তারা নির্বাচনকে প্রাধান্য না দিয়ে, বাড়ি চলে যেতে পারে। এ প্রেক্ষপট বিবেচনা করে নির্বাচনের দিন অর্ধবেলা অফিস খোলা থাকবে, বিকেলের দিকে অফিস বন্ধ থাকবে।’

কে এম নুরুল হুদা বলেন, যান চলাচলের ব্যাপারে অন্যান্য নির্বাচনে আমরা কঠোর অবস্থানে থাকি, যেকোনো ধরনের ব্যক্তিগত পরিবহন ও বাস-মিনিবাস বন্ধ রাখি। দেখা গেছে যান চলাচল বন্ধ থাকার কারণে ভোটাররা দূরের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন না। অনেকে সে অজুহাতে ভোট দিতে যান না। সেক্ষেত্রে আমরা বলেছি, পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসন রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে প্রথমে বসে পরে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরের শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে কত সীমিত আকারে যান চলাচল চালু রাখা যায় সে ব্যাপারটি ঠিক করবেন।’

সিইসি বলেন, ‘বিভিন্ন সময় কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পোলিং এজেন্ট কেন্দ্রে আসেননি। পোলিং এজেন্ট হবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি। কেন্দ্রে কোনো অনিয়ম হলে তাকে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।’

সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচনে বড় অভিযোগ- ভোটকেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া। তবে পোলিং এজেন্ট নিজ দায়িত্বে কেন্দ্রে আসতে হবে। যখনই তিনি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবেন তখন তার নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।’

তিনি বলেন ‘অভিযোগ আসে পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে আসতে দেয়নি, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন না এজেন্টরা। এছাড়া গত দুই বছরে ভোটকেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। প্রার্থীদের কাছে অনুরোধ আপনারা যোগ্য এজেন্ট দেবেন। এক্ষেত্রে কারো অধিকার ব্যাহত করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। তবে বলতে হবে কে, কখন, কোথায় বাধা দিয়েছে।’

নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ করার জন্য সবার সহযোগিতা চাই। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্তদের কোনো স্বার্থ নেই।’

কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে যে ধরনের কথা প্রচলিত আছে, ঢাকায় দুই সিটি নির্বাচনের পর সেসব কথা কমে গেছে। আপনারা দেখেছেন আগে নির্বাচনের আগে ইভিএম নিয়ে নানা টক-শো, আলোচনা হতো- এখন তা নেই। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে এবং বিষয়টি সাংবাদিকরা ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারলে এ সমালোচনা আর থাকবে না।’

বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি ওমর ফারুক, সিএমপি কমিশনার মাহাবুবর রহমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, সহকারী রিটার্নিং অফিসার মনির হোসেন খান, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা।