করোনায় খালি নেই বেড, অ্যাম্বুলেন্সেই চিকিৎসা

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

যুক্তরাজ্যে ভয়াবহ রূপে হাজির হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না সংক্রমণ। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে আক্রান্ত। সঙ্গে মৃত্যুর মিছিলেও যুক্ত হচ্ছে নতুন সংখ্যা। মহামারিতে খালি নেই হাসপাতালের বেড, অ্যাম্বুলেন্সেই চলছে তাদের চিকিৎসা।

যুক্তরাজ্যে করোনায় মঙ্গলবার নতুন করে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক ৫৩ হাজার ১৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪১৪ জনের। যা মহামারি শুরুর পর থেকে একদিনে সর্বাধিক সংখ্যক আক্রান্তের রেকর্ড। এর আগে গত সোমবার সর্বাধিক আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪১,৩৮৫ জন।

এদিকে মঙ্গলবার করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪১৪ জন। যা গত সোমবার ছিল ৩৫৭ জন, রোববার ছিল ৩১৬ জন। দেশটিতে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৫৬৭ জনে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত হাসপাতালে ও হাসপাতালের বাইরে করোনায় মৃতের সংখ্যা যুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থামাতে আরো কঠিন বিধি-নিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। এরই মধ্যে ইংল্যান্ডে চলছে টিয়ার ৪ লকডাউন। এর থেকেও কড়াকড়ি আরোপকে টিয়ার ৫ লকডাউন বলে খবর প্রকাশ করেছে দেশটির গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’।

খবরে বলা হয়েছে, টিয়ার ৪ লকডাউন মহামারি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট নয় বলে সাবধান করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই ভিত্তিতে টিয়ার ৫ লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়েছে সরকারি সূত্র।

প্রায় দুই সপ্তাহজুড়ে লন্ডন, সাউথ-ইস্ট ইংল্যান্ড এবং দেশটির পূর্বাঞ্চলে কঠিন লকডাউন চলছে। এর অধিনে মানুষকে বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে নিষিদ্ধ করা হয়েছে হাউজহোল্ড মিক্সিং।বাড়ির বাইরে সর্বোচ্চ একজনের সঙ্গে দেখা করা যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিভিন্ন অঞ্চলে কড়াকড়ি আরও কিছুদিন স্থায়ী করা উচিত। বড়দিনের ছুটি চলায় দেশটিতে করোনা পরীক্ষায় ধীরগতি দেখা গেছে। ফলে সাময়িকভাবে সেখানে পরিস্থিতি খারাপের দিকে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।

তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, সমগ্র ইংল্যান্ডকেও যদি টিয়ার ৪ লকডাউনের আওতায় আনা হয় তারপরেও ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন স্ট্রেইনকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তাই এখন টিয়ার ৪ এর থেকেও কঠিন লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।

হোয়াইট হল সূত্র থেকে জানা গেছে, টিয়ার ৪ লকডাউন আর কাজ করছে না। সরকার তাই টিয়ার ৪ লকডাউনের আরও একটি স্তর যুক্ত করতে যাচ্ছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নতুন কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে।

তবে এই নতুন লকডাউন কেমন হবে তা নিয়ে এখনো কোনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। একে টিয়ার ৫ লকডাউন বলে ডাকা হবে কিনা তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন পদক্ষেপে স্কুল কলেজগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে এবং অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে।

এদিকে পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় বেড়েছে করোনায় আক্রান্ত রোগী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লন্ডনে বসবাসরত অসংখ্য বাংলাদেশি পরিবারের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ফলে প্রবাসী বাংলাদেশির মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

পূর্ব লন্ডনের রয়েল লন্ডন হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ও হাসপাতাল রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। হাসপাতালে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স। পর্যাপ্ত বেড খালি না থাকায় অনেক রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।