করোনার সময় সিয়াম সাধনা

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago
বেলায়েত বাবলু

বেলায়েত বাবলু : ধর্মপ্রান মুসল্লীদের সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজানের শুরু হয়েছে গত ২৫ এপ্রিল। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজান মাসটি মুসল্লীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি মাস। এ মাস জুড়ে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকেন তাঁরা। সারা বছর মসজিদ গুলোতে মুসল্লীদের যতোটা ভীড় না থাকে রমজানে তার চেয়ে বেশী ভীড় পরিলক্ষিত হয়।

আর জুম্মার সময়টাতে মসজিদে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অনেকে নামাজ আদায় করে থাকেন। কিন্তু করোনার প্রাদূর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় মসজিদগুলোতে মুসল্লীদের যাতায়াত সীমিত করে নির্দেশনা দেয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন। গত ২৫ এপ্রিল থেকে রমজান মাস শুরু হয়েছে এবং গত ১মে শুক্রবার ছিলো রমজানের প্রথম জুম্মা। বিধি নিষেধ থাকায় মসজিদগুলোতে মুসল্লীদের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়েনি। নির্দেশনার বাইরে অনেক মসজিদে ১০ জনের বেশী মুসল্লীর দেখা মিললেও তা যেন ছিলো অনেক বেশী বেমানান। কয়েকজন মুসল্লীর সাথে কথা বললে তারা জানান তারা নির্দেশনা মেনেই মসজিদে গিয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করেছেন।

নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত দোয়া মোনাজাতে তারা করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে দোয়া করেছেন। এদিকে বিধি মেনে মসজিদে যেকে না পারা অনেক রোযাদার আক্ষেপের সুরে বলেন এই প্রথমবারের মতো রমজানে মসজিদে গিয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করা থেকে বঞ্চিত হলাম। দেখতে দেখতে ১০টি রোজা শেষ হয়ে গেলো। মুসল্লীরা রোযা রাখলেও এখন মসজিদে গিয়ে তারাবির নামাজও সেভাবে আদায় করতে পারছেনা। করোনার প্রভাবে এই প্রথমবারের মতো মসজিদের পরিবর্তে মুসল্লীদের বাসায় বসে তারাবির নামাজসহ সকল ইবাদতে সামিল হতে হচ্ছে। তাও আবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। ছোটকাল থেকে দেখেছি রমজানের সময়ে মুসল্লীদের মধ্যে পুরুষেরা দল বেঁধে মসজিদে গিয়ে আর নারীরা সংঘবদ্ধভাবে বাসার বসে নামাজ আদায়সহ সকল ইবাদত কার্যে অংস নিতো। অনেকে মসজিদে গিয়েই ইফতার করতো। বড় বড় মসজিদগুলোতে শত শত লোকের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা থাকতো। যা গত বছর পর্যন্ত ভালোভাবেই চলে আসছিলো। দেখেছি রমজানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন সহ ব্যক্তি পর্যায়ে ইফতার ইফতার মাহফিলের আয়োজন করার।

কিন্তু এবছর তাও হচ্ছেনা। প্রতি বছর রমজানের সময় নগরীর বড় বড় খাবারের দোকানসহ, অলিগলিতে ইফতার সামগ্রী বিক্রির ধুম পড়ে যেতো। প্রথম কয়েকদিন এর ব্যতয় ঘটলেও কিছুটা শিথিল হওয়ায় এখন অনেক স্থানে ইফতার সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এবারের রোজার মতো অবস্থা আমাদের মুরব্বীরা কেন তাদেরও মুরব্বীরা দেখেছে কিনা সন্দেহ। আমরা যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী তারা আশা করবো এবারের মতো রমজানের দিন আমাদের জীবনে যেন আর না আসে।

ঈদের কেনাকাটার সুবিধার্থে সরকারের পক্ষ থেকে ১০ মে থেকে স্বল্প পরিসরে দোকান ও শপিংমল খোলা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে আশংকার কথা হচ্ছে কেনাকাটা না হলো ঈদের জামাত কোথায় পড়বো? শিশুকাল থেকে ঈদগাহ গিয়ে জামাতে অংশ নিয়েছি। এবার কিভাবে তা আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। দয়ালু আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক। মহামারী এই করোনার প্রাদূর্ভাব থেকে আমাদের সকলকে হেফাজত করুন। আমিন।

লেখক:বেলায়েত বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়ন