করোনা মহামারির সাথে যুদ্ধের মধ্যেই দেশে আঘাত হানে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এরপরই আসে দীর্ঘমেয়াদি বন্যা। এত সব ছাপিয়েও যখন দেশের অর্থনীতির গতি ঠিক রাখতে সরকার সব চেষ্টা করে যাচ্ছে, তখন একটি পক্ষ দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার রাতে (১৫ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মুজিববর্ষের বিশেষ অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদ নেতা বলেন, ‘করোনার মধ্যে দেশকে ঠিক মতো পরিচালনার সব চেষ্টা যখন সরকার করে যাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশে নির্বাচন হয়, করার নামে তারা অংশগ্রহণ করে। টাকা-পয়সা যা পায় তাই নিয়ে পকেটে রেখে দেয়। কোনো এজেন্ডা দেয় না। ইলেকশনের দিন ইলেকশন করার নামে…মাঝপথে ইলেকশন বয়কট করে বাসে আগুন দিয়ে তারা একটা অন্যরকম পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।’
‘কোনো কথা নেই, বার্তা নেই। হঠাৎ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস কেন? কী স্বার্থে, কিসের জন্য!’ প্রশ্ন শেখ হাসিনার!
বিরোধীদলসহ সংসদে আলোচনায় অংশ নেয়া সব আইন প্রণেতাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বঙ্গবন্ধুর জীবনাচরণ ও রাজনৈতিক বিভিন্ন পদক্ষেপসহ দেশ পরিচালনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সমবায়ের মাধ্যমে জাতির পিতা দেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে সরকার পরিচালনা শুরু করলেও, সেই সময় সুযোগ কোনোটাই তাকে দেয়া হয়নি।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল বলেই দেশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। অন্য কোনো দল তো দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করেনি। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করাই আওয়ামী লীগের একমাত্র চিন্তা বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়েছিলেন। অথচ পাকিস্তানি প্রভুদের দাসত্ব ভুলতে না পেরে দেশের বিরুদ্ধেই নামল একটা পক্ষ। তারাই চায়নি স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে-ঘরে উঠুক। এবং তারাই তখন নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫’র পর ক্ষমতা দখল করা দলগুলো নির্বাচনের নামে পুরো পদ্ধতিটিকেই প্রহসনে পরিণত করে গেছে। এখন আমরা নির্বাচনী পদ্ধতিটি ঠিক করার চেষ্টা করছি।’
জাতির পিতাকে জানতে সংসদের এই বিশেষ অধিবেশনের গুরুত্ব অনেক বেশি উল্লেখ করে চলতি অধিবেশনে (রোববার) গ্যালারিতে বসে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অধিবেশন শোনায় তাকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
সাধারণ আলোচনায় সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের পর ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে সংবিধান প্রণয়নের সময় দেয়া জাতির পিতার ভাষণটি বড় পর্দায় দেখানো হয় অধিবেশন কক্ষে।
অধিবেশন শেষে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৯ নভেম্বর থেকে এই বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। এতে ৭৯ জন সংসদ সদস্য মোট ১৯ ঘণ্টা তিন মিনিট জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর আলোচনা করেছেন। স্মৃতিচারণ, গভীর আবেগ ও ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় জাতির পিতাকে।’