চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনারের ডিপোতে লাগা আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ২৫টি ইউনিট। তবে কনটেইনারে দাহ্য পদার্থ থাকায় থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার ফাইটারদের। এমন পরিস্থিতিতে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী।
রোববার (৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের একটি দল। কনটেইনারে থাকা দাহ্য পদার্থ বিস্ফোরণ কীভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছেন সেনা সদস্যরা।
বিস্ফোরণে কনটেইনারের থাকা যেসব দাহ্য পদার্থ ছড়িয়ে পড়েছে, তা ড্রেন দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে মিশতে পারে। এতে সমুদ্রের পানি এবং মাছ ও জলজপ্রাণী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। ফলে ড্রেন দিয়ে দাহ্য পদার্থ সমুদ্র ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতেও কাজ করছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
ঘটনাস্থলে থাকা চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরা সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরা সুলতানা বলেন, ‘কনটেইনার ডিপোটিতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রয়েছে। এখানে বহু বিস্ফোরণ হয়েছে। ফলে কেমিক্যাল ছড়িয়ে পড়েছে। এ কেমিক্যাল যাতে ড্রেনের মাধ্যমে সমুদ্রে না ছড়াতে পারে, সেজন্য সেনাবাহিনীর বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং টিম ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধে কাজ করছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলে কেমিক্যাল সমুদ্রে ছড়াতে পারে। এতে সমুদ্রের পানি এবং মৎস্য ও জলজপ্রাণীর ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন এসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা, আগুন যাতে আর ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য সেনাবাহিনীর ১৫০-২০০ সদস্য অভিযানে অংশ নেবেন।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের একটি কমিটি করা হবে। কমিটিকে চার থেকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হবে। এছাড়া বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আর আহত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সদস্যরা গতকাল (শনিবার) রাত থেকে আমাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আহত ফায়ার ফাইটারদের সেনাবাহিনীর সিএমএইচে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সেখানে এখনো অনেকে চিকিৎসাধীন।’
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানির বেশ কিছু সদস্য ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে যারা এক্সপার্ট তারা কাজ করছেন। যেহেতু এখানে কেমিক্যাল আছে, আমরা চেষ্টা করছি এ এলাকার বাইরে যেন আগুন না চলে যায়। এখন পর্যন্ত এ এলাকার মধ্যেই আগুন সীমাবদ্ধ আছে।’
এদিকে, বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন কর্মীও রয়েছেন। আগুনে আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক। দগ্ধদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।
দুপুর ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সেখানে একের পর এক কনটেইনার বিস্ফোরণ হচ্ছে। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুনের লেলিহান শিখা। নিরাপদ দূরত্বে থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com