কঠোর বিধিনিষেধের খবরে টিসিবির পণ্যের চাহিদা আরও বেড়েছে

:
: ৩ years ago

একদিকে বাজারদর ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে রমজানের শুরুতে দেশে থাকবে কঠোর বিধিনিষেধ। এর দৃশ্যমান প্রভাব এখনই বোঝা যাচ্ছে টিসিবির পণ্য বিক্রির ট্রাকসেলগুলোর সামনে। বিশেষ করে কঠোর বিধিনিষেধের খবরের পর থেকে আরও কয়েকগুণ দীর্ঘ হয়েছে টিসিবির পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের লাইন।

রমজান উপলক্ষে টিসিবির খোলাবাজারে দ্বিতীয় ধাপে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে গত ১ এপ্রিল। এরপর ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেয়া হয় বিধিনিষেধ। ফলে ওই সময় থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে টিসিবির ট্রাকসেলে বাড়তি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। যা এখন আরও বেড়েছে।

সরেজমিনে রাজধানীর রামপুরা, শান্তিনগর, ফকিরাপুল বাজারে টিসিবির ট্রাকসেলের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। রামপুরা বাজারে টিসিবির ট্রাক সেলে বিক্রি শুরু হয় দুপুর ১২টায়। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে প্রায় শতাধিক মানুষের লাইন দেখা যায়। দেখা যায়, পণ্য বিক্রি করতে হিমসিম খাচ্ছেন ডিলার ও বিক্রয়কর্মীরা।

 

তবে বেশকিছু স্থানে টিসিবির ট্রাকসেল পৌঁছাতে দেরি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড্ডা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দুপুর দেড়টায়ও আসেনি টিসিবির ট্রাক। এর মধ্যে সেখানে শতাধিক মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

সেখানে অপেক্ষামান আছিয়া বেগম বলেন, ‘বাড়ির কাজ ফেলে সকাল ১০টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ট্রাকতো আসে না। আসবে কিনা সেটাও কেউ জানে না।’

এ বিষয়ে কয়েকজন ডিলার মুঠোফোনে জানান, চাহিদা বেশি থাকায় বরাদ্দের পণ্য তুলতে সময় লাগছে। তবে যখনই তারা পণ্য পাচ্ছেন সঙ্গে সঙ্গে নির্ধারিত এলাকায় গিয়ে বিক্রি শুরু করছেন।

সোমবার (১২ এপ্রিল) রামপুরা এলাকায় পণ্য বিক্রি করছিলেন ডিলার জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৭০ থেকে ১০০ ট্রাক পণ্য বুঝে নিতে হচ্ছে টিসিবির তেজগাঁও গোডাউন থেকে। তাতে সময় লাগছে। এখন প্রতিদিন ১২০০ কেজি তেল, ৩০০ কেজি মসুর ডাল, ৭০০ কেজি চিনি, ৪০০ কেজি ছোলা, ৫০০ কেজি পেয়াজ ও ১০০ কেজি খেজুর বরাদ্দ পাচ্ছি।’

এদিকে সেখানে দীর্ঘ লাইনে থাকা ক্রেতা সাদেক মিয়া বলেন, ‘বাজারে তেল, চিনির দাম অনেক বেশি। এখানে কিছুটা সাশ্রযয়ে কেনা যাচ্ছে। ফলে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। তবে যত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছে তেল-চিনি পাব কিনা সন্দেহ।’

টিসিবি যে সকল পণ্য বিক্রি করে এর মধ্যে তেল ও চিনির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ কারণে ট্রাকসেল শুরুর অল্প সময়ের মধ্যে তেল ও চিনি ফুরিয়ে যায়। কাঙ্খিত পণ্য না কিনতে পেরে ফিরে যান অনেকে।

অন্যদিকে দ্বিতীয় ধাপে রমজানের পণ্যের দাম কিছুটা বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছে টিসিবি। এতে প্রতি কেজি তেলের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে। ডাল, চিনির দাম আগের থেকে ৫ টাকা বাড়ছে বলে জানা গেছে। আর নতুন করে প্রতি কেজি ছোলার দাম ৫৫ টাকা ও খেজুরের দাম ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, এখন ৫০০ ট্রাকসেলে পণ্য বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে। এর মধ্যে রাজধানীতে পণ্য বিক্রি হচ্ছে ১০০ ট্রাকে। এসব পণ্য ১ এপ্রিল থেকে ই-কমার্সের মাধ্যমেও বিক্রি শুরু হয়েছে। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন টিসিবির পণ্য বিক্রি চলবে।

টিসিবি জানিয়েছে, ট্রাকসেলে একজন ক্রেতা দিনে ৫৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি, ৫৫ টাকা কেজি দরে ২ কেজি মসুর ডাল, ১০০ টাকা দরে ৫ লিটার সয়াবিন তেল এবং ২০ টাকা দরে ৫ কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। এছাড়া ২ কেজি ছোলা ৫৫ টাকা দরে এবং রমজানের প্রথম দিন থেকে এক কেজি খেজুর ৮০ টাকা দরে কিনতে পারবেন।