মোবাইলে এসএমএস’র মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যেই মিলছে রেজিস্ট্রিকৃত জমির মূল দলিল। আর একদিনেই অবিকল দলিলের নকল এবং ৩ দিনেই যেকোনো সালের দলিল তল্লাশির ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।
অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তবে এমন গ্রাহক সেবা মিলছে গাজীপুর সদর দ্বিতীয় যুগ্ম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে।
এক সময় দলিলের নকল এবং দলিল তল্লাশির জন্য মাসের পর মাস ঘুরতে হতো সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস মানেই ছিল দুর্ভোগ আর কষ্টের জায়গা।
তবে এখন বদলে গেছে পুরাতন সব চিত্র। বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম পুরো সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে একটি শৃংখলার মধ্যে নিয়ে এসেছেন। তার হাত ধরেই বদলে যায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম। শুরু হয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার।
গাজীপুর দলিল লেখক সমিতির উপদেষ্টা জামাল উদ্দিন ও নকলনবীশ সমিতির সভাপতি মোছাব্বির হোসেন কিরন জানান, আগে এক-দুই সপ্তাহের আগে নকল এবং ৫-৬ বছরের আগে মূল দলিল পাওয়া যেতো না। ভলিয়্যুম এলোমেলো থাকায় তল্লাশি দিয়ে দলিল পাওয়া ছিল কষ্টসাধ্য। অফিস ছিল ৬ তলায়। নারী ও বৃদ্ধদের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতেও অনেক কষ্ট হতো।
এছাড়া ছিল না ক্রেতা-বিক্রেতাদের বসার জায়গা। গত আগস্ট মাসে দ্বিতীয় যুগ্ম সাবরেজিস্ট্রি অফিস নিচতলায় সুপরিসর জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন একদিনেই নকল ও ৭ দিনে জমির মূল দলিল পাচ্ছেন জমি ক্রেতারা। শত বছরের পুরোনো দলিল হলেও মাত্র তিনদিনেই দেয়া হচ্ছে তল্লাশি দলিল। দেশের আর কোনো সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এমন সেবার কাজের নজির নেই বলেও জানান তারা।
শুধু তাই নয় দেশের মধ্যে একমাত্র গাজীপুর সদরের দ্বিতীয় যুগ্ম অফিসের নকল নবীশরা নিয়মিত বেতন পেয়ে থাকেন।
সাব-রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, বর্তমান সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেশের সব সরকারি অফিসে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে। পিছিয়ে ছিল সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও নির্দেশনায় তিনি এখানে ডিজিটাল সেবা চালু করেছেন।
আগে দলিল রেজিস্ট্রির পর একজন ক্রেতাকে মূল দলিলের জন্য বহুবার রেজিস্ট্রি অফিসে ধর্ণা দিতে হয়েছে। এতে সময় ও অর্থের অপচয় হয়েছে। এখন মোবাইলে এসএমএস দিয়ে দলিল সরবরাহ করা হচ্ছে।
এছাড়াও সদর রেজিস্ট্রি অফিস, রেকর্ড রুমকেও নিচে এনে আরো আধুনিক ও স্বচ্ছতা আনায়নের কাজ চলছে। কোনো সেবাগ্রহিতা যেন কোনো ধরনের হয়রানি বা ভোগান্তির শিকার না হন তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।