ধর্মঘট চলাকালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের এমপি রমেশ চন্দ্র সেনের গাড়িতে ডিজেল না দেয়ার ঘটনায় চৌধুরী ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে তেল কেনাবেচা বন্ধ করে দেন এমপি রমেশ চন্দ্র সেনের সমর্থক মোটর শ্রমিকরা।
রোববার (০১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এমপি রমেশ চন্দ্র সেনকে বহনকারী গাড়ি চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে গেলে জ্বালানি (ডিজেল) না দিয়ে ফিরিয়ে দেন পেট্রল পাম্প শ্রমিকরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঠাকুরগাঁও সফর শেষে রোববার সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এমপি রমেশ চন্দ্র সেন। তাকে বহনকারী গাড়ি দুটি শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে ডিজেল নেয়ার জন্য গেলে জ্বালানি না দিয়েই ফিরিয়ে দেন পাম্পে কর্মরত শ্রমিকরা। এ সময় গাড়িতে বসা ছিলেন এমপি রমেশ চন্দ্র সেন।
এমপির গাড়িতে ডিজেল না দেয়ার কারণ জানতে চাইলে পাম্পে কর্মরত শ্রমিক অটল রায় বলেন, পেট্রল পাম্প মালিকের নির্দেশে সব ধরনের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রেখেছি আমরা। শুধু এমপি নন, কোনো গাড়িতেই জ্বালানি দিচ্ছি না।
এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে আরেকটি ফিলিং স্টেশন থেকে পেট্রল নিয়ে সৈয়দপুরে যান এমপি রমেশ চন্দ্র সেন। এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের সামনে এলোপাতাড়ি ট্রাক-পিকআপ ফেলে রেখে তেল কেনাবেচা বন্ধ করে দেন এমপি সমর্থিত পরিবহন শ্রমিকরা।
পরিবহন শ্রমিক এন্তাজুল হক বলেন, এমপিকে অসম্মান করায় এই পাম্প থেকে কোনো শ্রমিক ডিজেল-পেট্রল কিনবে না। তাই চৌধুরী ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় ট্রাক, ট্যাংক, লরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জয়েনুদ্দীন বলেন, এমপি নিজে একটি পাম্পে পেট্রল নিতে গেছেন। আর কর্মচারীরা তাকে পেট্রল না দিয়ে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এমন কাজ করে এমপিকে অসম্মান করেছেন পেট্রল পাম্প কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে এমপি সমর্থিত শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তাই পেট্রল পাম্পটি বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের বিতরণ কর্মী রবিউল ইসলাম বলেন, এমপির গাড়ি যখন এখানে পেট্রল নিতে আসে, ওই সময় অনেক মোটরসাইকেল আরোহী পেট্রল নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাদের পেট্রল দিতে অস্বীকার করায় মোটরসাইকেল আরোহীরা এমপির গাড়ি দেখিয়ে বলতে থাকেন, দেখব এবার এমপিকে পেট্রল দেন কি-না। একথা শুনে জনরোষের ভয়ে এমপির গাড়িতে পেট্রল দেইনি আমরা।
বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁওয়ের সভাপতি এনামুল হক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কর্মবিরতি সমিতির সিদ্ধান্ত। কর্মসূচি চলাকালে এমপির গাড়ি পেট্রল নিতে গেলে অনেক ক্রেতার ভিড় ছিল। তাই বিতরণ কর্মীরা এমপির গাড়িতে পেট্রল দেননি। পরে আমিই অন্য একটি পাম্প থেকে এমপিকে পেট্রল নেয়ার ব্যবস্থা করে দেই। এখন শুনছি, ওই ঘটনা নিয়ে একদল শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে পাম্পের তেল কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি আর কী বলল?
এ বিষয়ে এমপি রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, পেট্রল পাম্পে কর্মবিরতি চলছে এটা জানা ছিল না। সে কারণে ঢাকা যাওয়ার পথে ওই পাম্পে পেট্রল নিতে যাই। কিন্তু আমাকে পেট্রল দেয়া হলো না। এতে আমার অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হতেই পারে।
জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করে ট্যাংক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, পেট্রলপাম্প মালিক সমিতিসহ জ্বালানি ব্যবসায়ীরা। সোমবার ওই কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com