এবার এনআরবিসি ব্যাংক ছাড়লেন ফরাসাত আলী

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

অনিয়ম, দুর্নীতির ও নানা জালিয়াতির ঘটনায় জর্জরিত এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাসাত আলী পদত্যাগ করেছেন। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তমাল এসএম পারভেজ।

রোববার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভায় এসব পরিবর্তন হয়।

সভায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) দেওয়ান মুজিবর রহমানকে বাধ্যতামূলক ৩ মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কাজী মো. তালহাকে। পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য কমিটির প্রধানরাও পদত্যাগ করেছেন। নতুন নির্বাচন হয়েছে সব কমিটিতে।

সভায় পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে তৌফিক রহমান চৌধুরী পদত্যাগ করলে ওই পদে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ শহীদ ইসলাম। নির্বাহী কমিটির (ইসি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আবু বকর চৌধুরী। ওই পদে ছিলেন মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম। নুরুন নবী অডিট কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করায় সেখানে নির্বাচিত হয়েছেন রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু। এছাড়া রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন আদনান ইমাম। ওই পদে ছিলেন সৈয়দ মুন্সেফ আলী। এমডির দেওয়ান মুজিবুর রহমানের ছুটি কার্যকর হলে সেখানে ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কাজী মো.তালহা।

বিদ্যমান সংকট নিয়ে আলোচনা করার জন্য রোববার গুলশানে ওই জরুরি সভা ডাকা হয়। পরিচালনার শীর্ষ ব্যক্তিদের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ব্যাংকটিতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ধরা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হয়। স্থায়ী কমিটি ডিসেম্বরের মধ্যে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের নির্দেশ দেয়।

দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ৬ ডিসেম্বর এমডি দেওয়ান মুজিবুর রহমানকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরদিন অপসারণাদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এমডির অপসারণকে কেন্দ্র করে জরুরি বোর্ড সভা ডাকে ব্যাংকটি। ওই সভা করার জন্য গত শনিবার রাজধানীর একটি হোটেল আলোচনায় বসেন ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। ওই আলোচনায় পুনর্গঠন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে প্রায় ৯ মাসের প্রক্রিয়া শেষে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গভর্নরের অনুমোদনের পর দেওয়ান মুজিবুর রহমানকে অপসারণ করে চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া আগামী ২ বছর কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি পদে তিনি যোগদান করতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

অনেক বোর্ড সভায় পরিচালকদের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দশটি গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনআরবি কমার্শিয়ালের এমডিকে অপসারেণের এ নির্দেশ দেয়া হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়।