ফুটবলার কিংবা কোচ- দুই দায়িত্বেই সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেছেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। ফ্রান্সের হয়ে দলীয় সাফল্যে জিতেছেন বিশ্বকাপ, ব্যক্তিগতভাবে জিতেছেন ব্যালন ডি অর। এছাড়া ক্লাব ফুটবলেও জুভেন্টাস ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দেখেছেন একের পর এক সাফল্য।
খেলোয়াড়ি জীবনে তিনি বারবার বলেছেন, অবসরের পর কোচ হওয়ার কোন ইচ্ছা নেই তার। তবু ২০১৪ সালে রিয়াল মাদ্রিদের একাডেমি দল থেকে শুরু করেছেন কোচিং, পরে ২০১৬ সালে হয়েছেন রিয়ালের মূল দলের কোচ। মাঝে বিরতি নিলেও, এখনও দলটির কোচ জিদান।
বরাবরের মতো কোচিংয়েও সাফল্যের কমতি নেই জিদানের। রিয়ালের হয়ে প্রথম মৌসুমেই জিতেছেন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। পরের দুই মৌসুমে জিতেছেন আরও দুইবার। এছাড়া উয়েফা সুপার কাপ, স্প্যানিশ সুপার কাপসহ তিনবার জিতেছেন ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপও।
জিদানের অধীনেই ২০১৬-১৭ মৌসুমে সবশেষ লা লিগা জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। চলতি মৌসুমে আবারও লিগ শিরোপা জেতার পথে রয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা। অথচ কোচ হিসেবে এত এত সাফল্য পাওয়ার পরেও কাজটিকে যেন ঠিক উপভোগ করছেন না রিয়াল বস।
রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচে এসপানিওলের মুখোমুখি হবে রিয়াল। এ ম্যাচে জয় পেলেই এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে বসে তারা। পরে লিগের বাকি ম্যাচগুলো জিতলেই নিশ্চিত হবে শিরোপা। এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে জিদান জানালেন, কোচিং যেন ঠিক আগ্রহ জোগাতে পারছে না।
এসপানিওলের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘কোচের চেয়ে ফুটবলার হিসেবে আমি ভালো ছিলাম। যদিও যেটা করছি, তা নিয়ে আমি খুশি, কিন্তু কোচ-ফুটবলার পরিচয় নিয়ে আমার ভাবনাটা এরকমই।’
শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে কোচিং করানোরও কোন ইচ্ছা নেই জিদানের, ‘আমি বিশ বছর ধরে কোচিং করাব না। জানি না কত বছর কোচিং করাব। আমি কোন কিছু নিয়ে তেমন পরিকল্পনা করি না। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন করাই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তারপর আমি অন্যকিছু করব।’
কোচ হিসেবে ভুরিভুরি সাফল্য পেলেও, নিজের খেলোয়াড় পরিচয়টি এখনও ভুলতে পারেন না জিদান। এতদিন পর এসেও নিজেকে ফুটবলার হিসেবে পরিচয় দিতেই যেন বেশি স্বস্তি তার।
জিদানের ভাষ্য, ‘আমি সবসময় একজন ফুটবলার- এ ভাবনাটাই আমার মাথায় থাকে। আমি ১৮-১৯ বছর খেলেছি এবং যখন আমাকে জিজ্ঞেস করা হতো, আমি কোচ হব কি-না, উত্তরে বলতাম, না। শেষপর্যন্ত আমি কোচ হলাম। কিন্তু এই পেশায় ধীরে ধীরে আগ্রহ কেড়ে নেয়।’
তবে রিয়ালের কোচ হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন জিদান, ‘এই ক্লাবে (রিয়াল মাদ্রিদ) আসতে পেরে এবং কোচ হতে পেরে আমি ভাগ্যবান। যদিও আমি ভাগ্য শব্দটা খুব বেশি পছন্দ করি না। আপনাকে নিজের ওপর বিশ্বাস করতে হবে এবং উপভোগ করতে হবে। এর বাইরে আমি কিছু পাত্তা দেই না।’