সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে যমুনা নদীর ওপর অকেজো দাঁড়িয়ে রয়েছে মিটুয়ানী সেতু। প্রায় আট বছর আগে বিলীন হয়েছে এ সেতুর সংযোগ সড়ক। ফলে বর্ষা মৌসুমে নৌকাই একমাত্র ভরসা নদীর দুপাড়ের বাসিন্দাদের। কিন্তু নির্বিঘ্নে নৌযান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে দাঁড়িয়ে থাকা সেতুটি। ফলে বিভিন্ন সময় ঘটছে প্রাণহানি। তাই সেতুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, যমুনা বিধৌত চৌহালী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের জন্য প্রায় দুই যুগ আগে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের মিটুয়ানী বাজার সংলগ্ন ৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি গার্ডার সেতু নির্মাণ হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত সেতুটি ২০১৪ সালের বন্যায় ভাঙনের মুখে পড়ে। তবে সেতুটি বিলীন না হলেও সংযোগ সড়ক ও মিটুয়ানী বাজারসহ বিশাল এলাকা নদীগর্ভে চলে যায়।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষার সময় মিটুয়ানী থেকে সম্ভুদিয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচল করে। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের সিলেট, বগুড়া, নওগাঁ, বেড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ভূঞাপুরে পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌকাও চলাচল করে এ পথে। তবে ব্যস্ততম এ নৌপথের মাঝে বিশাল আকৃতির অকেজো এ ব্রিজটি দাঁড়িয়ে থাকায় প্রতিনিয়তই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
এলাকার নৌকার মাঝি ছামাদ আলী ও যাত্রী মন্টু মণ্ডল বলেন, নদীর মধ্যে সেতু থাকায় স্রোতের টানে অপরিচিত নৌকা চলাচল করতে গিয়েও দুর্ঘটনা শিকার হয়। ছয় বছর আগে এ সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে এক নৌকার ১০ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হন। এছাড়া তিন বছর আগে খাষপুখুরিয়া এলাকার এক স্কুলছাত্র নদীতে গোসলে গিয়ে স্রোতের টানে ভেসে সেতুর ধাক্কায় লেগে মারা যায়। সেতুটি দ্রুত অপসারণ করে নিরাপদ নৌ যোগাযোগ চালুর দাবি জানান তারা।
চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা ইয়াসমিন বলেন, মিটুয়ানী গার্ডার সেতুটি অপসারণের জন্য এরই মধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার বলেন, মিটুয়ানী গার্ডার সেতুটি অপসারণের ব্যাপারে আপাতত কোনো উদ্যোগ নেই। চৌহালী উপজেলা টাঙ্গাইলের নিকটবর্তী হওয়ায় ওই সেতুটিসহ বিলীন হওয়া সড়কটি টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগকে দিয়ে দেওয়া হবে।