দায়িত্ব গ্রহনের এক বছর পূর্তিতে সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
বুধবার সন্ধ্যায় নগর ভবনে তাকে বরিশালের জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান এবং বর্ষপূর্তির একটি কেক উপহার দেন।
এছাড়া র্যাব-৮ এর পক্ষ থেকে র্যাব কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন খালেদ মাহমুদ, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ, বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, মহানগর ছাত্রলীগসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্তাব্যক্তি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে মেয়রকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।
এর আগে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর দায়িত্ব গ্রহনের ১ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে নগর ভবনে বিশেষ দোয়া মোনাজাত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ছাড়াও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। মেয়র সকলের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে গত এক বছরে তাকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মেয়র বলেন, সকলের সহযোগিতা নিয়ে আমি এগিয়ে চলার চেষ্ঠা করছি। প্রথম এক বছরে আমি বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নীতি নৈতিকতার উন্নয়নে কাজ করেছি। আর এখন থেকে নগর উন্নয়নে মনোনিবেশ করবো। এক বছর নয় ৫ বছর পর জনগন মূল্যায়ন করবেন আমি তাঁদের জন্য কোন কাজ করতে পেরেছি কিনা।
অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সেবা দিয়ে থাকে। সার্ভিস ও সেবা এ দুটোতেই গত এক বছরে আমূল পরিবর্তন এসছে। এখন সিটি কর্পোরেশনে সেবা নিতে আসতে কেউ ভয় পাননা। নগরবাসী তাঁদের জীবন মান উন্নয়নে মেয়রকে কাজে লাগাচ্ছেন।
মেয়রকে একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে আখ্যায়িত করে জেলা প্রশাসক বলেন, মেয়রের শরীরে বঙ্গবন্ধুর রক্তের মিল আছে। আজ মেয়রের কারনে বরিশাল নগরী একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন নগরী। মেয়র নিজে রাতে শহর ঘুরে বেড়ান। তাঁর কারনে সকলের মধ্য থেকে আজ ফাঁকির প্রবনতা কমে গেছে।
জেলা প্রশাসক মেয়রের আগামী দিন গুলোর জন্য শুভ কামনা জানিয়ে বলেন, আগামীতে বরিশাল নিয়ে আপনার সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হোক।
অনুষ্ঠানে বরিশালের পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, মেয়র তৃনমূল থেকে তাঁর কার্যক্রম শুরু করেছেন। সর্বত্রই তাঁর বিচরন। মেয়রকে তাঁর পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে আমাদের সকলকে সহায়তা করতে হবে। তাঁর পরিকল্পনা গুলো আমি দেখেছি। যা আমাকে সত্যিই অভিভূত করেছে।
অনুষ্ঠানে উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিন) মোয়াজ্জেম হোসেন ভুইয়া বলেন, মেয়রের হাত ধরে বরিশাল সত্যিই প্রাচ্যের ভেনিস হিসেবে রুপ পাবে। মেয়র যা পারবেন অন্যরা তা পারবেন না। এক সময় অন্যরা বরিশালকে দেখতে আসবে।
অনুষ্ঠানে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর বর্তমান পরিষদের সাফল্য কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়। এতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করা হয়।
এছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহতদের স্মরন করে তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কমিটির আহবায়ক মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনা করা হয়।
দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন চকবাজার জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদের খতিব মাও. নুরুর রহমান বেগ।
এদিকে বিকেলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ নগরীর খামার বাড়ির প্রশিক্ষন হলে আয়োজিত ডিপ্লোমা কৃষিবিদ দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
ডিকেআইবির বরিশাল জেলা সভাপতি আবুল বসার জোমাদ্দারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, অনেকে আমাকে বলে আমি নাকি টিনের চশমা পড়েছি। অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে শপথ পড়িয়েছেন তা বাস্তবায়নে আমি টিনের চশমা পড়েছি। আমি অন্যের সম্পদ লুটপাট করে খাওয়ার জন্য টিনের চশমা পড়িনাই।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে উদ্দেশ্যে করে মেয়র বলেন, পরিস্থিতি আগে থেকেই আচ করতে পেরে মেনন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এখনকার মানুষ সব বোঝে। মিথ্যা বলে সাময়িক বুঝ দেয়া যায়। তবে কথা আর কাজের সাথে মিল থাকতে হবে। সকালে এক কথা আর বিকেলে যারা আরেক কথা বলে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নাই।
মেয়র বলেন, গত এক বছরে আমি দৃশ্যমান উন্নয়ন করতে না পারলেও আমি দায়িত্ব নিয়ে চুরি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি। আমি শারিরীক শ্রম দিয়ে বরিশাল নগরীকে পরিচ্ছন্ন নগরী করতে চেষ্ঠা করছি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, সাবেক সাংসদ ও বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তালুকদার মো: ইউনুস, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীরসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত থেকে মেয়রকে শুভেচ্ছা জানান।
সভায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, কৃষক লীগ বরিশাল জেলা সভাপতি অ্যাড. সাইফুল আলম গিয়াস, সাধারণ সম্পাদক শেখ মিজানুর রহমান, ডিএই’র উপ পরিচালক হরিদাস শিকারী, ডিকেআইবির কেন্দ্রীয় নেতা আলী আজগর মোল্লাসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।