এক দশকে বাংলাদেশের অগ্রগতি অত্যন্ত প্রশংসনীয়

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সকল স্তরে অগ্রগতি করেছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিবারই যখন এদেশে আসি, ব্যাপক উন্নতি চোখে পড়ে। বিশেষ করে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে অগ্রগতি, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’

বুধবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দশ দিনের অনুষ্ঠানমালার অষ্টম দিনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক ড. রওনাক জাহান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। এছাড়া পোপ ফ্রান্সিস এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী রেকর্ড করে শুভেচ্ছা (ভিডিও) বার্তা পাঠিয়েছেন।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ডা. লোটে শেরিং বলেন, ‘করোনা মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশ এশিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই অগ্রগতিতে আমি গর্বিত। কারণ বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনীতি, ভুটান ও এ অঞ্চলের জন্য প্রেরণাদায়ক।’

বাংলাদেশকে ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ হিসেবে অভিহিত করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান উদযাপন করতে এসেছি- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রত্যেকেরই অন্যের কাছে বলার মতো একটা গল্প আছে। বাংলাদেশেরও সেরকম গল্প আছে; যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে বসে শুনতে পেরে আমি আনন্দিত। তিনি আমার কাছে মায়ের মতো অনুপ্রেরণাকারী নেতা।’

তিনি বলেন, ‘এ জাতীয় উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান কেবলমাত্র বাংলাদেশের মানুষই নয়, সমগ্র অঞ্চলের মানুষের মনোভাবকে একীভূত করে। কিন্তু আমরা এমন সময় পার করছি, যখন করোনা মহামারি বহু মূল্যবান জীবন কেড়ে নিয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক মিলিয়ন মানুষের জীবন-জীবিকা ব্যাহত করেছে।’

এ সময় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান ডা. শেরিং।

শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘তার মানুষের প্রতি এতো যত্ন ও মনোযোগ দূর থেকেও আমি অনুভব করতে পারি। বাংলাদেশ তাকে পেয়ে সত্যিই ধন্য। আমি নিশ্চিত যে, শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার মেয়ে এখন বাংলাদেশের গর্ব।’

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল বিপুল জনসংখ্যার এই দেশেও মহামারি ভালোভাবে মোকাবিলা করেছেন। এই সময়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের যে সহযোগিতা পেয়েছি, তার জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য শক্ত ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। আমি এখানে তার কন্যার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি, যিনি তার বাবার সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তিনি বলেন, ‘এ বছর ভুটান বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপভোগ করছে। একসঙ্গে আমাদের যাত্রা অব্যাহত থাকলে আরও বেশি সাফল্য ও অর্জন হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গেই বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রাজাও মনে করেন, শান্তি ও সম্প্রীতিই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।’

তিনি এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের অংশীদার হওয়ার এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ আতিথেয়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।