ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত হলেন দক্ষিণ জনপদের একুশে পদক প্রাপ্ত প্রথম গুনিজন নিখিল সেন। শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল পেসক্লাবের প্রবীন সদস্য, সংস্কৃতিজন নিখিল সেন রাষ্ট্রের ২য় সম্মান সূচক পদক একুশে পদক পাওয়ায় প্রেসক্লাবের আয়োজনে বর্ণাঢ্য সংর্বধণা দেয়া হয়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব কম্পাউন্ডে এ সংর্বধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ছন্দ ও সুরের তালে তালে সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হক, বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক ও সংসদ সদস্য এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুস, ওর্য়াকার্স পার্টির জেলা সম্পাদক ও সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ মোঃ টিপু সুলতান, বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মোতালেব হাওলাদার, ভাষা সৈনিক ইউসুফ হোসেন কালু, মহানগর আওয়ামীলীগের সম্পাদক এ্যাড. একে এম জাহাঙ্গির, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোকলেসুর রহমান, ওর্য়াকার্স পার্টির মহানগর আহ্বায়ক শান্তি দাস, গণফোরাম সভাপতি এ্যাড. হিরন কুমার দাস মিঠু, জাসদের এ্যাড. আব্দুল হাই মাহাববু, মানবাধিকার জোট সভাপতি ডাঃ হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক সাইদুনেছা লায়লা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
প্রথমে ফুল দিয়ে নিখিল সেনকে সংবর্ধনা প্রদান করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম আমজাদ হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাব সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে মানপত্র পাঠ করেন ক্লাবের সাবেক সভাপতি এ্যাড. মানবেন্দ্র বটব্যাল। নিখিল সেনের জীবনী পাঠ করেন সংস্কৃতিজন এ্যাড. নজরুল ইসলাম চুন্নু ও উত্তরীয় পড়িয়ে দেন প্রবীন সাংবাদিক নুরুল আলম ফরিদ। সংবধর্ণা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বরিশালের মানুষ গুনি মানুষকে সম্মান জানাতে পারে। তাই যুগে যুগে বরিশালে বহু গুনি মানুষের জন্ম হয়েছে। তারা দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। নিখিল সেন আজ শুধু মাত্র বরিশালের নয় সারা বাঙলাদেশের সম্পদ। নিখিল সেন বাংলাদেশের একজন প্রতিথযশা নাট্যকার ও সংস্কৃতিকর্মী। তিনি একজন অভিনয় শিল্পী, নাট্যকার, আবৃতিশিল্পী, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনীতিবিদ। আবৃত্তিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেছেন। সর্বোশেষ নাটকে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন। এর আগেও ১৯৯৬ সালে শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন সম্মাননা ও ২০০৫ সালে শহীদ মুনীর চৌধুরী পুরস্কার পান। তিনি ১৯৩১ সালের ১৬ এপ্রিল বরিশালের কলশ গ্রামে নিখিল সেন জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম যতীশ চন্দ্র সেনগুপ্ত ও মা সরোজিনী সেনগুপ্ত। তিনি বাবা মায়ের ১০ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ। নিখিল সেন মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য কোলকাতা সিটি কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে আবার বরিশালে ফিরে আসেন। সিরাজের স্বপ্ন নাটকে সিরাজ চরিত্রে অভিনয় করার মধ্য দিয়ে নাট্যজীবন শুরু করেন নিখিল সেন। এরপর তিনি অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন। নিজেই দিক নির্দেশনা দিয়েছেন ২৮টি নাটকে। নিখিল সেন কমিউনিস্ট আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে নিখিল সেন যুদ্ধে যোগদান করেন।