ডা. মোঃরিয়াজুল ইসলামঃ স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই মানুষ আজ অনেক স্বাস্থ্য সচেতন। বিশেষভাবে, এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও তার ক্রস রেজিস্টেন্স এর ব্যাপারে মানুষ আজ উদ্বিগ্ন। আর এ ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি হতেপারে একটি আদর্শ বিকল্প। তাই আজ একিউট ও ইমার্জেন্সি রোগে আমার তথা হোমিওপ্যাথির সাফল্য সম্পর্কে দু-চারটা কথা বলার প্রয়াস করছি।
ডা. স্যামুয়েলহানেমান প্রচলিত এলোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী (এম বি বিএস, এমডি) চিকিৎসক হয়েও কেন হোমিওপ্যাথিকচিকিৎসা পদ্ধতির জন্ম দিলেন? এ প্রশ্নত্তোরের মধ্যেই রয়েছে হোমিওপ্যাথির বৈজ্ঞানিকব্যাখ্যা ও বিশেষত্ব। হোমিওপ্যাথি সর্ব কনিষ্ঠ চিকিৎসা বিজ্ঞান যা বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক নিয়ম দ্বারা নিযন্ত্রিত। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের নীতি নির্ধারণী গ্রন্থ হল“অর্গানন অব মেডিসিন”যাকে হোমিওপ্যাথি রসংবিধান বলা হয়। হোমিওপ্যাথি বলতে অর্গাননকেই বুঝায়, অর্গাননের বাইরে কোন হোমিওপ্যাথি নেই। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে অধিকাংশ হোমিওপ্যাথরাই হোমিওপ্যাথিতে নেই।
হোমিওপ্যাথির সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতিকেপাশকাটিয়েতারা রোগিকেঅন্যান্য প্যাথিরওষুধ দেন,যা হোমিওপ্যাথির সাথে দিন-রাতপার্থক্য। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাবিজ্ঞান আরোগ্যের বিশ্বজনীন নিয়ম প্রকৃতিতে দেখাযাচ্ছে, দু’টো সদৃশ লক্ষণ সম্পন্ন রোগ, শক্তিশালিটা দূর্বলটাকে দূরকরে। যেমন- নিজের মনের শোক ও দুঃখ অন্যের অধিকবি পদের কাহিনী শুনে প্রশমিত হয়। সদৃশ নিয়মে আরোগ্যের নীতি এতদিন প্রকৃতিতে ইছিল।
হানেমান প্রকৃতির সদৃশ আরোগ্যের নীতি কেন তুনকরে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রচলন করেছেন। হোমিওপ্যাথি যেহেতু প্রকৃতির এক চিরন্তননীতির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এর ওষুধের কার্যকারিতা সুস্থ্য মানবদেহে পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এর ওষুধের কার্যকারিতা চিরকাল অক্ষুন্ন থাকবে। হোমিওপ্যাথিরবয়স ২৩০বছর। শুরুতে যেমন হোমিওপ্যাথি ওষুধ কার্য করছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। পক্ষান্তরে এন্টিবায়োটিক এর জন্ম ১৯২৬ সালে, এখনো ১০০ বছরও হয়নি। অথচ কোন কোন ক্ষেত্রে কার্যকারিতা হারাচ্ছে।
তাই বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের এন্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসাবে হোমিওপ্যাথির কথা ভাবাউচিত। একটাবিষয়সকলেইএকমত যে, জটিল ও পুরাতন ক্রনিক রোগ (যেমন- টিউমার, পাইলসইত্যাদি) হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়নির্মলআরোগ্য হয়। যেহেতু ক্রনিক রোগেরবয়স ৫/১০/২০ বছর,তাইতামূল থেকে সারতে এক/ দেড় বছরসময়লাগাটাইস্বাভাবিক। অন্যদিকে, যে সকল রোগহঠাৎকরেআক্রমনকরেএবংযার স্থায়ীত্ব অল্পসময়তাএকিউট রোগনামেপরিচিত। যেমন-জ্বর, সর্দ্দি-কাশি, ডায়রিয়া, আমাশয়, মাথাব্যাথা, ফোঁড়া, কোষ্টকাঠিন্য, অনিদ্রা ইত্যাদি। আবারকিছু দূর্ঘটনাজনিতবাইমার্জেন্সি রোগআছে যেমন-আঘাতলাগা, পড়েযাওয়া, কাটা-ছেড়া, পোড়াইত্যাদি। এসবএকিউটবাইমর্জেন্সী রোগ খুব দ্রæতআরোগ্য প্রদানকরতেহয়এবংসর্বাপেক্ষা দ্রæতআরোগ্য প্রদানেরমধ্যেইচিকিৎসাপদ্ধতির কৃতিত্ব নির্ভরকরে। এক্ষেত্রেঅধিকাংশমানুষেরধারণা হোমিওপ্যাথি একটাআদালতিচিকিৎসাবাধীরেকাজকরে। এ ধারণাএকেবারেইভুল। একিউট রোগেও যে হোমিওপ্যাথি দ্রæতকাজকরেতামানুষজানেনাএবংবিশ্বাসওকরেনা। আসলেবর্তমানবাজারেঅহোমিওপ্যাথি নামকপরগাছারআড়ালে হোমিওপ্যাথি ঢাকাপড়েছে। ফলেপ্রকৃত হোমিওপ্যাথিরসুফল থেকে জাতিবঞ্চিত। আমার এক যুগচিকিৎসাজীবনেরক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায় দৃঢ় বিশ্বাসজন্মেছে যে,এসবএকিউট রোগে হোমিওপ্যাথি সর্বাপেক্ষা দ্রæতসময়েপার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত ভাবেমাত্রকয়েকঘন্টারমধ্যে আরোগ্য নিশ্চিতকরে। এক্ষেত্রেসাফল্যেরহার ৯৫%। বিশেষকরেজ্বরচিকিৎসায় বিস্ময়করসাফল্য দেখে আমরাইঅবাকহয়েযাই। ক্রনিক রোগে তোহোমিওপ্যাথিরসাফল্য সর্বজন স্বীকৃত।
ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রেবর্তমানে“যৌন রোগ”নিয়েমানুষসবচেয়ে বেশীউদ্বিন্ন। এ ক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথিরঅবদান অবিস্মরণীয়।উল্লেখ্য, অর্গাননঅব মেডিসিনগ্রন্থেরআলোকেযারাজ্ঞানঅর্জনকরেনএবংতাসুষ্ঠপ্রয়োগকরেনতারাইএকমাত্র হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। হোমিওপ্যাথিতে কোন পেটেন্টঔষধনাই।আসুন রোগার্ত মানুষেরআর্তনাদ বন্ধকরারজন্যে প্রকৃত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকেরশরনাপন্নহই।যারাএন্টিবায়োটিক মুক্ত জীবনগড়তেচানতাদেরজন্যে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাহতেপারেএকটিঅনন্য বিকল্প।
ডা. মোঃরিয়াজুল ইসলাম
ডিএইচএমএস (বোর্ড স্ট্যান্ড)