#

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসেন হেলাল উদ্দিন (২৮) নামে এক যুবক। এসময় স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ওই যুগলকে শিকলবন্দি করে রাখে।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাতে উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের করোকোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাদের উদ্ধার করেন।

প্রেমিক হেলাল উদ্দিন ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা গ্রামের সিরাজুল ইসলামে ছেলে। তিনি এক সন্তানের জনক। তার প্রেমিকা চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের করোকোলা গ্রামের সুমন আলীর স্ত্রী। তিনিও এক সন্তানের জননী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হেলাল উদ্দিন ও ওই নারীর মধ্যে প্রায় তিনবছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে একে অপরের সঙ্গে দেখা করতেন এবং একান্তে সময় কাটাতেন। শুক্রবার রাতে ওই নারী ফোন করে হেলালকে তার বাড়ি ডেকে আনেন। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন টের পান। তারা ওই নারীর ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এসময় তারা দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় পান। পরে উত্তেজিত লোকজন তাদের শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন।

স্থানীয়রা শনিবার সকালে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তিকে বিষয়টি জানায়। এরপর তিনি গ্রাম পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। চেয়ারম্যান ওই যুগলকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন।

এরপর বিষয়টি অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুলকে জানানো হয়। দুই ইউপি চেয়ারম্যান শনিবার বিকেলে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদে সালিশের আয়োজন করেন। সেখানে ওই যুগল, তাদের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

সে বৈঠকে উপস্থিত ওই নারীর স্বামী সুমন আলী আর স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করবেন না বলে জানিয়ে সালিশ থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশদের মাধ্যমে তাকে মির্জাপুর বাজার থেকে আবার বৈঠকে ফিরিয়ে নিয়ে আনেন। তখন বৈঠকের সিদ্ধান্তে জানানো হয়, স্ত্রীকে তালাক দিলে কাবিনের এক লাখ টাকা সুমনকে শোধ করতে হবে। সুমন সেই টাকা দিতে না পেরে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি চলে যান। অন্যদিকে, পরকীয়া প্রেমিক হেলালের বাবার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ওই নারীর স্বামী সুমন আলী বলেন, ‘আমি প্রথমে আমার বউকে নিতে চাইনি। পরে এক প্রকার বাধ্য হয়েই নিতে হয়েছে। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারবো না।’

এ বিষয়ে নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তি বলেন, পরিষদে বিচার করে হেলালকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুল বলেন, তিনি সালিশের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ছিলেন। পরে কী হয়েছে জানেন না।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। স্থানীয়ভাবে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. মমতাজ মহল বলেন, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। এ বিষয়ে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্থানীয়ভাবে সমস্যাটির সমাধান করেছেন।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন