একাত্তরের রাজাকার ও পঁচাত্তরের খুনিরা একই বৃন্তের ফুল

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরের গণহত্যাকারী, রাজাকার আর পঁচাত্তরের খুনিদের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। তারা একই বৃন্তের ফুল। তারাই দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছে।

রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা জয়ী হয়েছি বলেই উন্নয়নের ছোঁয়াটা মানুষ পেয়েছে। যদি আমরা আসতে না পারতাম তাহলে সব কাজগুলো নষ্ট করে দিতো।

তিনি বলেন, বিএনপি কখনো, কোনো দিন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিতো না। তারা দু’বছর, তিন বছর করে পরিকল্পনা নিতো। নিজেদের লাভ হতো, মানুষের উন্নয়ন হতো না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন এবং জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশটাকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। এজন্য আমরা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।

এ সময় জাতির পিতা নিজে কখনো তার জন্মদিন পালন করতেন না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা খুব ঘরোয়াভাবে এই জন্মদিন পালন করতাম। আমার মা প্রতি জন্মদিনে মসজিদে মিলাদের আয়োজন করতেন। আর নিজের হাতে জাতির পিতার পছন্দের খাবার রান্না করতেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) যদি জন্মগ্রহণ না করতেন আমরা স্বাধীন হতাম কি-না, আত্ম-মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারতাম কি-না সেটাই বড় প্রশ্ন।

তিনি বলেন, বাঙালির সব অধিকার আদায়ের আন্দোলনই জাতির পিতা করে গেছেন। বাংলায় কথা বলার অধিকারও জাতির পিতা দিয়ে গেছেন। এ অধিকারের পথ ধরেই কিন্তু আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দেখেছেন, তিনি কিন্তু প্রতি মুহূর্তে এই ভুখণ্ডের মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলতেন। আমাদের দেশের বহু নেতাকেই দেখেছি পাকিস্তানিরা একটু ডাক দিলে, অমনি দৌড়ে গিয়ে মন্ত্রি হওয়ার চেষ্টা করতেন।

বঙ্গবন্ধু নামকরণের গল্প তুলে ধরে তার মেয়ে বলেন, আমার দাদির কাছে গল্প শোনা, আব্বার নানা তাকে কোলে নিয়ে বলেছিলেন, তোমার ছেলের নাম শেখ মুজিবুর রহমান, দেখবে একদিন জগৎজোড়া নাম হবে। জানি না তিনি কীভাবে এ কথা বলেছিলেন।

সত্তর সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকেই নির্বাচন করতে চায়নি। আমার নিজের কানেই শোনা অনেকেই স্লোগান দিয়েছেন, ভোটের বাক্সে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। অনেকেই বিতর্ক শুরু করে দিয়েছিল ৬ দফা না ৮ দফা। আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতারা ক্রাইসিস মোমেন্টে মাথা ঠিক রাখতে পারেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যখন দেখি এবং তাদের ওখানে যে গণহত্যা হয়েছে তা দেখলে একাত্তর সালের কথা মনে পড়ে।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাজেদা চৌধুরী, সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, চিত্রশিল্পী হাসেম খান, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন প্রমুখ।