দীর্ঘদিন করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারির কারণে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ আটকে থাকায় এখন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে একই সঙ্গে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হচ্ছে জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘চাকরিপ্রার্থীদের আপাতত কিছুদিনের মধ্যে একটু ছাড় দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
কিছুদিন ধরে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে (শুক্র ও শনিবার) একই সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। আগামীকাল শুক্রবার (৮ অক্টোবর) একই দিনে মোট ১৪টি প্রতিষ্ঠান চাকরির পরীক্ষা নেওয়ার সূচি প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে কয়েকটি পরীক্ষা পড়েছে একই সময়ে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা বিশেষ সময় পার করছি। করোনা পরিস্থিতির ঊর্ধ্বগতির পর একটা স্বস্তিকর পরিস্থিতি আসছে। সব পরীক্ষা ডিউ (আটকে) ছিল। যেহেতু শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকে, পরীক্ষাগুলো শুক্র ও শনিবার নিতে হয়। কারণ যেসব ডিপার্টমেন্ট পরীক্ষা নেয় তারা সেভাবে অ্যারেঞ্জ করে। সেক্ষেত্রে আমরা যদি পরীক্ষাগুলো শুক্র ও শনিবার নেই তাহলে তো পরীক্ষা জট থেকেই যাবে। আমরা এখন এ স্বস্তিকর সময়ের মধ্যে পরীক্ষাগুলো নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘পৌনে দুই বছরের যে ব্যাকলক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে শূন্যপদগুলো আমাদের দ্রুত ফিলাপ করতে হবে। সেজন্য এই রকম (একই দিনে অনেকগুলো) অবস্থা কিছুটা হচ্ছে। আমার মনে হয় আর কিছুদিনের মধ্যে এটা ঠিক হয়ে যাবে। এটার বিকল্প কিছু করাও তো যাচ্ছে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পিএসসি (সরকারি কর্মকমিশন) বলছে তারা শুক্র ও শনিবার ছাড়া অন্যদিন করতে (নিয়োগ পরীক্ষা নিতে) পারবে। কিন্তু অন্য সংস্থাগুলো করতে পারবে না। তারপরও আমরা তাদের অনুরোধ জানাবো।’
‘যদি একটা বোর্ড থাকত বা একটা ফোরাম থাকত, যেখান থেকে পরীক্ষা হয়, তেমন কোনো ফোরাম নেই। তাই সমন্বয়টি করা হবে কীভাবে?’
ফারহাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যতে চিন্তাভাবনা আছে- পিএসসিকে আরও সম্প্রসারণ করে আরেকটি ইউনিট করে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ওটা (নিয়োগ প্রক্রিয়া) করা যায় কিনা, এটা নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি। সেটা হলে তখন আমরা এটা (ভিন্ন ভিন্ন দিনে পরীক্ষা) করতে পারতাম।’
তিনি বলেন, ‘পরিসংখ্যানের একটা উইং লোক নিচ্ছে, সমাজকল্যাণের একটা উইং নিচ্ছে, সমন্বয়টা করবে কারা? এত শুক্র ও শনিবার তো আপনি পাবেন না।’
‘মতামত হচ্ছে, আগেও আমাদের এই রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অতীতেও যারা শুক্র ও শনিবার পরীক্ষা দিয়েছেন, তাদের এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে। আমার সচিব মহোদয় বলছিলেন, আমি যখন পরীক্ষা দিয়েছি, আমি দুটো পরীক্ষা মিস করে একটি পরীক্ষা দিয়েছি। যেটা মনে করেছি ভালো সেটাতে অ্যাটেন্ড করেছি।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে সমন্বয়ের জায়গা নেই। একটা বোর্ড এই পরীক্ষা নিচ্ছে না। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা তাদের মতো করে করছে।’
ফারহাদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা সবাইকে এ বিষয়ে জানাতে পারি। তবে তারা যে খুঁজে বের (কোন দপ্তরের কবে পরীক্ষা) করবে সেটাও তো কঠিন কাজ। আগে থেকে তো বিজ্ঞাপনগুলো আসছে না। হঠাৎ করে বিজ্ঞাপন আসে। দেখি আমরা, কী করা যায়। তাহলে অন্যদিনে পরীক্ষা নিতে হবে। অন্যদিনে পরীক্ষা নিতে তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে হবে, শিক্ষকদের ফ্রি থাকতে হবে। অনেকগুলো প্রশ্ন আছে।’
‘চাকরি প্রার্থীদের আপাতত কিছুদিনের মধ্যে একটা ছাড় দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।
করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাকরি প্রার্থীদের বয়সের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২১ মাসের ছাড় দিয়েছে সরকার। ১৯ আগস্টের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৫ মার্চের পর থেকে যাদের চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর পার হয়েছে বা হচ্ছে, তারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জারি করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের যোগ্য হবেন।
পরে গত ২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সে ছাড়ের ভিত্তিতে সরাসরি নিয়োগের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com