উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফলাফল না পেয়ে সারাদেশে সোয়া লাখ শিক্ষার্থী আপত্তি জানিয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার বেশি। এ বছর পাসের হার কমায় আপত্তি আবেদন বেড়েছে বলে মনে করছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, দেশের আটটি সাধারণ ও মাদরাসা বোর্ডের প্রাপ্ত তথ্য মতে এক লাখ ২৫ হাজার ২৩৮ জন শিক্ষার্থী খাতা চ্যালেঞ্জ করেছে।
ঢাকা বোর্ডে ৪৬ হাজার ৩৭০ জন ফলপ্রার্থী আবেদন করেছে। এর মধ্যে ইংরেজিতে ৪০ হাজার, আইসিটিতে ১৮ হাজার ও পাদার্থ বিজ্ঞানে ৮ হাজার আবেদন পড়েছে।
চট্টগ্রাম বোর্ডে ১৭ হাজার ৭৪০ জন আবেদন করেছে। এর মধ্যে আবেদন পড়েছে ইংরেজি প্রথমপত্রে ৬ হাজার ৬২৭টি, দ্বিতীয়পত্রে ৬ হাজার দুটি, আইসিটিতে ৬ হাজার ৭৮৩টি, পদার্থবিজ্ঞান প্রথমপত্রে ৩ হাজার ৫৮৬ ও দ্বিতীয়পত্রে ৩ হাজার ৪২টি।
বরিশাল বোর্ডে ৩ হাজার ৭৮৩ জন ফলপ্রার্থী আবেদন করেছে। এর মধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রে ২ হাজার ৬২৩টি ও দ্বিতীয়পত্রে এক হাজার ৯১৮টি, পার্থ বিজ্ঞান প্রথম পত্রে ৭৩৩টি ও দ্বিতীয় পত্রে ৫৪১টি, আইসিটিতে ৯২১টি আপত্তি উঠেছে।
রাজশাহী বোর্ডে আবেদন করেছে ১৩ হাজার ৪২৮ জন। এর মধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রে ৬ হাজার ৪৩১টি ও দ্বিতীয়পত্রে ৫ হাজার ৬২৯, আইসিটিতে ২ হাজার ৭৬৯, পদার্থ বিজ্ঞান প্রথমপত্রে এক হাজার ৯৫৭ ও দ্বিতীয়পত্রে ২ হাজার ৪৫টি আবেদন পড়েছে।
দিনাজপুর বোর্ডে ৮ হাজার ৮৫৭ জন ফলপ্রত্যাশী আবেদন করেছে। এর মধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রে ৪ হাজার ৪৮৫টি ও দ্বিতীয়পত্রে ৩ হাজার ৯৫১, আইসিটিতে ২ হাজার ৩৫০ ও পদার্থ বিজ্ঞান প্রথমপত্রে এক হাজার ৪৩০ ও দ্বিতীয়পত্রে এক হাজার ৫২৭টি আবেদন করা হয়েছে।
সিলেট বোর্ডে ৭ হাজার ৬২৯ জন ফল চ্যালেঞ্জ করেছে। এর মধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রে ৩ হাজার ২১৩টি ও দ্বিতীয়পত্রে ৩ হাজার ৪০২, আইসিটিতে ২ হাজার ৩৩৪টি আবেদন পেড়েছে।
কুমিল্লায় ৯ হাজার ৩৫৫ জন আবেদন করেছে। এর মধ্যে ইংরেজি প্রথমপত্রে ৫ হাজার ৭২৭টি ও দ্বিতীয়পত্রে ৫ হাজার ৫৬৫, আইসিটিতে ২ হাজার ৬৯৩, পদার্থ বিজ্ঞান প্রথম পত্রে এক হাজার ৩১ ও দ্বিতীয় পত্রে ৯০৩টি আপত্তি উঠেছে।
যশোর বোর্ডে আপত্তি তুলেছে ১৩ হাজার ১৫৪ জন। কারিগরি বোর্ডের তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে এত বেশি আবেদনের ব্যাখ্যা দিয়ে আন্তঃবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার জাগো নিউজকে বলেন, চলতি বছর অন্যান্য বছরের চেয়ে খারাপ ফল হয়েছে। এ জন্য ফল চ্যালেঞ্জ করার সংখ্যা বেড়েছে। এবার ইংরেজি, আইসিটি, পর্দাথ বিজ্ঞানের পরীক্ষা কঠিন হওয়ায় অনেকেই কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি। এ তিন বিষয়ের আবেদন বেশি পড়েছে। আগামী ২২ আগস্ট পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করা হবে।
‘এ ছাড়া গত দুই বছর থেকে শিক্ষাথীরা জিপিএ স্কোরে কত নম্বর পেয়েছে তা জানতে পারত না। এখন তা দেখতে পারছে। শুধু তাই নয়, কোন পত্রে কত, এমসিকিউর আলাদা আলাদা কত নম্বর পেয়েছে তাও দেখতে পারছে।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মতে, সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছে পরবর্তী গ্রেডের কাছাকাছি নম্বর পাওয়ার প্রত্যাশীরা। যেমন কেউ যদি ৭৮ বা ৭৯ পায় তারাই ফল পরিবর্তনের জন্য আবেন করেছে। তাদের ধারণা হয়তো নম্বর পরিবর্তন হয়ে যাবে।
বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, পুনঃনিরীক্ষণে মূল্যায়ন হওয়া খাতার মোট চারটি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো- উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের নম্বর সঠিকভাবে দেয়া হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি না, এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কি-না। এসব বিষয় পরীক্ষা করেই পুনঃনিরীক্ষার ফল দেয়া হয়।