এইচএসসির ফলাফলে বৈষম্যের অভিযোগ সুমির

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পরও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাননি বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সুমি খানম। তিনি এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ-৪.৭৫। এই ফলাফলে তিনি ‘বৈষম্যের’ শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

করোনাভাইরাসের কারণে পরীক্ষা ছাড়াই অটোপাস দেয়া হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের। জেএসসি ও এসএসসির গড়ের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয়েছে ৩০ জানুয়ারি। জেএসসি ও এসএসসির গড় ফলের ভিত্তিতে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। তবে জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ থাকার পরও ৩৯৬ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাননি। তাদের একজন সুমি খানম।

সুমি বলেন, ‘আমি পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছি। পরীক্ষা ছাড়া গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল দেয়া হলেও আমি জিপিএ-৫ পাইনি। আমার এইচএসসির ফল এসেছে জিপিএ ৪.৭৫। আমি বৈষম্যের শিকার হয়েছি।’

এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করলেও এইচএসসিতে বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক নিয়ে পড়াশোনা করেছেন সুমি খানম।

তিনি বলেন, ‘আমি বিভাগ পরিবর্তন করেছি। বিজ্ঞান থেকে মানবিক বিভাগে এসেছি। আমার ফলাফল হওয়ার কথা ছিল জেএসসির গণিত এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় থেকে ২৫ শতাংশ এবং এসএসসির বিজ্ঞান থেকে ৭৫ শতাংশ নিয়ে। অথচ আমার ক্ষেত্রে জেএসসির গণিত এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের ফল গণনা না করে গণিত এবং বিজ্ঞান থেকে ফল কাউন্ট করা হয়েছে। এজন্য আমার এইচএসসির ফল এ প্লাস না এসে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ এসেছে। সঠিকভাবে ফল গণনা করা হলে আমার ফল ৫ পয়েন্টের ওপর চলে যাবে। বিভাগ পরিবর্তনের কারণে আমার যেভাবে ফল দেয়ার কথা সেভাবে দেয়া হয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পিছিয়ে থাকতে হবে উল্লেখ করে সুমি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় এসএসসি ও এইচএসসি থেকে ১০ মার্ক করে মোট ২০ মার্ক নেবে। ওখানে আমার রেজাল্ট কমে যাবে। দুই বা তিন নম্বর কমে গেলে আমি ৪ থেকে ৫ হাজার শিক্ষার্থীর পেছনে পড়ে যাব। তাহলে আমার তো ঢাকা ইউনিভার্সিটি হলো না। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় না, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট কাউন্ট হয়। সেখানেও পিছিয়ে যাব।’

সুমির বড় ভাই সজীব ওয়াফি  বলেন, ‘এইচএসসির ফলাফলে আমার বোন অবিচার ও বৈষম্যের শিকার হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মানবিক বিভাগে পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীদের ফল মূল্যায়ন করতে শিক্ষা বোর্ড ভুল করেছে। ভুলক্রমে শিক্ষা বোর্ড গ্রুপ পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিজ্ঞান বিভাগের হুবহু পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। যার কারণে গ্রুপ পরিবর্তন হওয়ার আগে অনেকে জিপিএ ৫.০০ পেয়েছিল, তাদের সঙ্গে অবিচার ও বৈষম্য করা হয়েছে। আমার বোনও একই বৈষম্যের শিকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিজ্ঞান বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে আসা শিক্ষার্থীদের ফলাফল মূল্যায়ন হওয়ার কথা ছিল জেএসসি পরীক্ষার গণিত এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি পরীক্ষার বিভাগভিত্তিক তিনটি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে। কিন্তু শিক্ষা বোর্ড কোনোক্রমে ভুল করে জেএসসি পরীক্ষার গণিত এবং বিজ্ঞান বিষয়ের প্রাপ্ত গড় নম্বর হিসাবে করে ফলাফল মূল্যায়ন করেছে। এর ফলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরিবর্তন হয়ে মানবিক বিভাগে আসা শিক্ষার্থীদের ফলাফলে জেএসসি পরীক্ষার বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয় বিবেচনা করা হয়নি এবং বিপর্যয় নেমে এসেছে।’