এআইজি শামসুন্নাহারের পিএইচডি ডিগ্রি লাভ

:
: ৩ years ago

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) শামসুন্নাহার শামছুন্নাহার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এআইজি শামসুন্নাহারের পিইচডিতে গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল ‌‘বাংলাদেশে পুলিশ প্রশাসনে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির সংস্কার’ (রিফরম অব হিউম্যান ম্যানেজম্যান্ট সিসটেম ইন পুলিশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব বাংলাদেশ)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে তার এই বিষয়ের অভিসন্দর্ভের জন্য সম্প্রতি পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

 

এর আগে শামসুন্নাহার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ‘বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন’ (এমপাওয়ারম্যান্ট অব উইম্যান থ্রু পারটিসিপেশন ইন লোকাল গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ) বিষয়ে গবেষণাকর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে ২০০৫ সালে এম.ফিল ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া তিনি ২০০৭ সালে চেভেনিং স্কলারীশপের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহাম থেকে এমবিএ (পাবলিক সার্ভিস ইন্টারন্যাশনাল) ডিগ্রি লাভ করেন।

 

 

বর্তমানে পুলিশের এআইজি শামসুন্নাহার ইতালিতে ইউনাইটেড ন্যাশনস গ্লোবাল সার্ভিস সেন্টার (ইউএনজিএসসি) এর স্ট্যান্ডিং পুলিশ ক্যাপাসিটি’তে (এসপিসি) হিউম্যান রিসোর্চ অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি চাঁদপুর ও গাজীপুরের সাবেক জেলা পুলিশ সুপার ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জাতীয় প্যারেডে পর পর দুইবার নেতৃত্ব দেন।

 

গত অক্টোবর মাসে নিউজিল্যান্ডের সুপরিচিত সাময়িকী ‘দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনে’ শামসুন্নাহারকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে এই কর্মকর্তাকে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও রুচিশীল কর্মকর্তা হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

 

দ্য ওয়েলিংটন ম্যাগাজিনের বিশেষ সংখ্যায় প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এই সংখ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আবুল বাশারসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিশেষ সংখ্যাটির শিরোনাম ‘যেসব মানুষ জাতিকে আলোকিত করেছেন’।

 

এআইজি শামসুন্নাহারকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি বাংলাদেশে কোনো পুলিশ প্যারেডে নেতৃত্বদানকারী প্রথম নারী কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (এআইজি), বাংলাদেশ পদে কর্মরত।

 

 

ফরিদপুরে জন্মগ্রহণকারী শামসুন্নাহার ১৯৯৩ সালে ১৬ বছর বয়সে যশোরে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে যান। সেই থেকে তার স্বপ্ন, তিনি দেশমাতৃকার প্রতিরক্ষায় ভূমিকা রাখবেন। সেসময় তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট করপসের ক্যাডেট ছিলেন। কিন্তু শামসুন্নাহারের জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্য হওয়া খুব একটা সহজ ছিল না। কারণ, তখনো সামরিক বাহিনীতে নারী সদস্য নিয়োগ সেভাবে শুরু হয়নি। একপর্যায়ে জাতিকে সেবা দিতে শামসুন্নাহার বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

 

শামসুন্নাহার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে সাতবার জাতিসংঘ শান্তি পদক অর্জন করেছেন। নিজ দেশে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম)। দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ মেডেলও (বিপিএম) অর্জন করেন। এছাড়া তিনি উইমেন পুলিশ মেডেল ফর ব্রেভ উইমেন পুলিশ অফিসার এবং দুটি আইজি ব্যাজও অর্জন করেন।

 

তার বাবা শামসুল হক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবী। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তার মা আমিনা বেগম পেয়েছেন ‘রত্নগর্ভা’ পদক।