উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে চিঠি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষণা ববি শিক্ষার্থীদের

:
: ৫ years ago
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

অনলাইন ডেস্ক :: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) টানা আন্দোলনের ১২তম দিনে শনিবার বিভাগীয় প্রশাসন আয়োজিত বৈঠকেও সমাধান মেলেনি। ফলে উপাচার্যের ছুটি বা পদত্যাগ লিখিত ভাবে না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন শির্ক্ষাথীরা।

বেলা ১১টায় বরিশাল সার্কিট হাউসের ধানসিড়ি হল রুমে জনপ্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রশাসন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধির মধ্যে শুরু হওয়া বৈঠক একটানা চলে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। বৈঠক শেষে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক সাংবাদিকদের বলেন উপাচার্যকে ছুটিতে পাঠানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে (উপাচার্যের মেয়াদ রয়েছে দু’ মাস)।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করছি। কিন্তু সব সিদ্ধান্তে একমত হতে পারেনি। পাশাপাশি বৈঠকে শিক্ষার্থীদের ২২ দফা দাবি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং উপাচার্য ইমামুল হক যাতে ছুটিতে যায় এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করা হবে এবং এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত তিনিই গ্রহণ করবেন।

বৈঠকের পর সন্ধ্যা ৬টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত বলেন, আমরা ২৬ জনের প্রতিনিধি দল বৈঠকে উপস্থিত হই এবং নেতৃবৃন্দের কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সকলের মতামতের ভিত্তিতে জানাবো বলে জানাই।

বৈঠক শেষে সকল শিক্ষার্থী ঐক্যমত্য হয়েছেন উপাচার্যের ছুটি বা পদত্যাগ সেটা লিখিত ভাবে না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। ঐ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় আজ রবিবার সকাল থেকে একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্র নেতা লোকমান হোসেন, শফিকুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বৈঠক শেষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, রবিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষা সহ একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু করা হবে। শনিবার রাত পৌনে ৯টায় ই-মেইলে ববির রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, রবিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হবে এবং একই সাথে সকল আবাসিক হলের যাবতীয় কার্যক্রম চালু করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে ববির উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হক জানান, আমি অফিসিয়াল ভাবে কোনো চিঠি পাইনি যাতে আমি ছুটিতে যাবো। কোনো চিঠি পেলে তারপর যেকোনো সিদ্ধান্তে আসা যাবে।

উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের না জানানোর কারণে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলায় আন্দোলন আরো বেগবান হয়। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের। এরপরও শিক্ষার্থীরা টানা ১২দিন আন্দোলনের পর শনিবার বরিশালের জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সাথে বৈঠকে বসে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটেনি, শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।