উপদেশ না শোনার পরামর্শ নোবেল বিজয়ী শেলফির

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

‘অন্যের উপদেশ শুনতে হয় না। তাতে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। নিজের মৌলিক সত্তা বেশি গুরুত্ব দিয়ে সব সমস্যা সমাধান করাই শ্রেয়। এভাবে এগিয়ে যেতে পারলে জীবনের কোনো বাধাই দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

শনিবার রাজধানীর একটি বেসরকরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে আমেরিকার নোবেল বিজয়ী রসায়ন বিজ্ঞানী ড. মার্টিন শেলফি কথাগুলো বলছিলেন।

মার্টিন শেলফি নিজের জীবনের ঘটনা মূল্যায়ন করে বলেন, ‘অর্থকষ্টে আমার বাবা স্কুলের গণ্ডি পেরুতে পারেননি। টিউশন ফির অভাবে মা কলেজের গণ্ডি পার হতে পারেনি। অর্থকষ্টে আমার মা-বাবার জীবনের অনেক ইচ্ছা পূরণ করতে পারেননি। অভাব-অনটনের মধ্যদিয়ে আমাকে বড় হতে হয়েছে। কিন্তু আমার প্রবল ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে একজন বিজ্ঞানী হওয়া। সে ইচ্ছা অনুযায়ী আমি গবেষণার কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু অনেক দিনের সেই গবেষণা কাজে ব্যর্থ হয়ে যাই। আমার সব চেষ্টাই বিফল হয়। এতে আমি অনেক হতাশ হয়ে পড়ি। আর মনে মনে ভাবতে থাকি যে, গবেষক হওয়ার ইচ্ছাটা বুঝি আর পূরণ হবে না।

তিনি বলেন, ‘এরপর প্রায় সকলে আমাকে গবেষণা কাজে নিরুৎসাহী করতে থাকে। আমাকে বলা হলো, নিজের বুদ্ধিমত্তা না থাকলে গবেষণা করা যায় না। তাই গবেষণা কাজ ছেড়ে অন্য কোনো পেশায় মন দেয়ার জন্য। কিন্তু আমি তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেও তাতে মনোবল হারাইনি।’

নোবেল বিজয়ী এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘জীবনের প্রথম ধাপে ব্যর্থ হয়ে আমি সাময়িকভাবে গবেষণা ছেড়ে দিয়ে হাইস্কুলে শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন কাজ করে জীবনযাপন করেছি। এরপর কিছুদিন পর আমার এক সহকর্মী আবার গবেষণায় কাজের সুযোগ করে দেন। আমি সবকিছু ছেড়ে আবার আমার মনের ভেতর সুপ্ত বাসনাকে জাগিয়ে তুলেছি। এ বেলায় আমি সফল হই। আমি বুঝতে পারি গবেষণা কাজ বিভিন্নভাবে হতে পারে। এ কারণে আমি সফল হয়েছি। তাই হাল ছেড়ে দিলে এ পর্যায়ে আসা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।’

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে গ্রিন ফ্লোরসেন্ট প্রোটিন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার পান এ বিজ্ঞানী। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।