বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থার তথ্য মতে চীন সরকার তার দেশে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। ধর্মান্তর এবং মুসলিম তরুণীদেরকে জোরপূর্বক অমুসলিমদের কাছে বিবাহ বসতে বাধ্য করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, উইঘুর মুসলিমদের হত্যার পর তাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গগুলোও বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ উঠছে।
চীনে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের হত্যা করে তাদের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো বিক্রি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। এ ঘটনাকে শতাব্দীর ভয়াবহ নৃশংসতার সঙ্গেও তুলনা করেছে তারা।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিটিসহ অনেক মানবাধিকার সংস্থাই চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতনের কথা বলে আসছে। শিনজিয়াং প্রদেশের শতকরা প্রায় ৪৫ ভাগ জনগোষ্ঠীই মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের।
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ২০১৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩১টি মসজিদ ধ্বংস করেছে দেশটির প্রসাশন। তাছাড়া এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি ইসলামি স্থাপনাকে আংশিকভাবেও ধ্বংস করা হয়েছে।
চীনে জাতিগত মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল।
ট্রাইব্যুনালের কাউন্সিলর হামিদ সাবি জাতীসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে (ইউএনএইচআরসি) জানান, ‘বহু বছর চীন জুড়ে জোর করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং এখনও তা অব্যাহত আছে। বন্দি উইঘুর মসুলিমরাই এ আক্রমণের শিকার। এতে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ নিরাপরাধ মুসলিম।
জীবিত মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হার্টসহ অন্যান্য অঙ্গ জীবিত অবস্থায় কেটে ফেলা শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ অত্যাচার চলছে নিরিহ নির্দোষ মানুষের ওপর।
সাবি আরও বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে অঙ্গ প্রতিস্থাপন একটি বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিজয়, কিন্তু দাতাকে হত্যা করা অপরাধ।’ কিন্তু নির্দোষ নিরীহ মানুষের অঙ্গ জোরপূর্বক বিচ্ছিন্ন করার মানেই হলো এটি শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ভয়াবহ গণঅত্যাচার।’
জাতিগত নির্যাতন হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে গড়া ট্রাইব্যুনালের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ‘চীনের বন্দি, ফালুন গং ও উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে তারা। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চীন সরকার সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর লোকদের হত্যা করে তাঁদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করছে৷
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় যে, বন্দি ও সংখ্যালঘু ছাড়াও জীবিত বা মৃত ব্যক্তির কিডনি, লিভার, হার্ট, ফুসফুস, কর্নিয়া এবং ত্বকের চামড়া বিক্রির জন্য অপসারণ করা হয়।
তবে ট্রাইব্যুনালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা অভিযোগগুলো অস্বীকার করে আসছে বেইজিং। তারা বলছে, ২০১৫ সালে যাদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছে, তাদের অঙ্গও তারা ব্যবহার করেনি।
চীনের আধ্যাত্মিক গোষ্ঠী ফালুন গংকে গত ২০ বছর আগে নিষিদ্ধ করা হয়। বেজিংয়ে দলটির ১০ হাজার সদস্য নিরবে এর প্রতিবাদ করে আসছে। যাদের বেশিরভাগকে জেলে পাঠানো হয়।
বেইজিং উইঘুর সংখ্যালঘু মসিলিমদের অঙ্গ বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করলেও চীনের নাগরিকসহ বহু বিদেশি চীনে তাদের অঙ্গ প্রতিষ্থাপন করে আসছেন।
অঙ্গ প্রতিস্থাপন সম্পর্কে লন্ডনে চীন দূতাবাসের এক মুখপত্র থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে জানান, ‘সরকারি বিধি-বিধানে এ শর্ত রাখা হযেছে যে, মানব অঙ্গ দান হতে হবে বিনা অর্থ ও স্বেচ্ছাসেবায়। যেখানে কোনো লেনদেন থাকবে না।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com