ঈদের দিন খালেদার খাবারের মেন্যুতে যা থাকছে

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

পাঁচ বছরের সাজার বোঝা মাথায় নিয়ে এখনো পুরাতন কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দুই মামলায় জামিন হাইকোর্ট থেকে স্থগিত হওয়ায় ঈদের আগে আর বের হওয়ার সম্ভাবনা নেই তার। আর তাই এবার কারাগারেই ঈদ করতে হচ্ছে ৪ মাস ধরে কারাগারে থাকা খালেদাকে। ঈদের দিন কারাগারে থাকা অন্যান্য কয়েদিদের মতো খালেদার জন্যেও রয়েছে খাবারের বিশেষ আয়োজন।

ঈদের দিন ঘুম থেকে উঠেই খালেদা পাবেন পায়েস, সেমাই ও মুড়ি যার সবই কারারক্ষীদের তৈরি। দুপুরের মেন্যুতে রয়েছে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী ভাত অথবা পোলাও পাবেন খালেদা। সঙ্গে থাকবে ডিম, রুই মাছ, মাংস আর আলুর দম। রাতের আয়োজনে থাকছে পোলাও, গরু অথবা খাসির মাংস, ডিম, মিষ্টান্ন, পান-সুপারি এবং কোমল পানীয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মেন্যুটা সাধারণ কয়েদিদের মতো হলেও তার জন্য রান্না হবে আলাদাভাবে।’

খালেদার জন্য বিশেষ খাবারের রান্নার মসলা ও পরিমাণ উল্লেখ করা থাকবে কারা চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী। এছাড়াও এসব মেন্যুর বাইরে খালেদা জিয়া অন্য কোনো খাবার খেতে চাইলে কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারেন। তবে সেই আইটেম তাকে দিতে বাধ্য নয় কারা কর্তৃপক্ষ।

কারা সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশেষ কোনো আইটেম তৈরির বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি খালেদা জিয়া।

এদিকে কারাগারের খাবার ছাড়াও পরিবারের সদস্যদের পাঠানো খাবার খেতে পারবেন খালেদা। জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘ঈদের দিন অনুমতি সাপেক্ষে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এছাড়াও এদিন আমরা পরিবারের খাবার একসেপ্ট করি।’

তবে পরিবারের আনা খাবারগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

এদিকে খালেদার পাশাপাশি একই খাবার পাবেন আদালতের অনুমতি নিয়ে তার সহযোগিতায় কারাগারে গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম (৩৫)। খালেদার সঙ্গে ফাতেমার পরিবারের লোকজনও তার সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে যাবেন বলে জানা গেছে।

এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজা ঘোষণার দিন থেকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। কয়েকবার জামিনে কারাগার থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও একাধিক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোয় জামিন প্রক্রিয়াটা জটিল হয়ে পড়ে। তাই এবার কারাগারেই ঈদ করতে হচ্ছে খালেদাকে।

এদিকে আদালতের অনুমতি নিয়ে খালেদার সঙ্গে থাকছেন ফাতেমা বেগম (৩৫)। ফাতেমা দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করছেন। কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে একই সেলে থাকছেন ফাতেমা বেগম।

দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জামিন নিয়ে আলোচনা হলেও বর্তমানে তার চিকিৎসা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতিক অঙ্গন। এতে কারা কর্তৃপক্ষও কিছুটা ‘উদ্বিগ্ন’।

গত শনিবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার ব্যক্তিগত চার চিকিৎসক সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়া ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ করেন। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হোক।

পরদিন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন্স) সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন স্ট্রোকের কথা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) পুরো অজ্ঞান হননি। সামান্য ভারসাম্য হারিয়েছিলেন। তিনি চাইলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হবে।’

তবে মঙ্গলবার কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিএসএমএমইউ’তে যেতে রাজি হননি খালেদা। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ব্যক্তিগত খরচে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার আবেদন করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেই আবেদন অমীমাংসিত রেখেই তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়ার প্রস্তাব দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। তবে শুক্রবার পর্যন্ত তিনি সিএমএইচে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে রাজি হননি।