ই-কমার্স বিজনেসের জন্য সঠিক মূল্য নির্ধারণ কৌশল খুঁজে পাওয়া খুব সহজ নয়।এজন্য মূল্য নির্ধারণের কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
যার মাধ্যমে আপনি আপনার বিজনেসের জন্য আদর্শ মূল্য নির্ধারণ কৌশল খুঁজে পাবেন।এই আর্টিকেলে ই-কমার্স কেনাবেচায় সঠিক মূল্য নির্ধারণের কিছু কৌশল এবং টিপস বর্ণনা করা হয়েছে।
যার মাধ্যমে আপনার ই-কমার্স বিজনেস জন্য উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ কৌশল নির্ণয় সাপেক্ষে বিজনেসের প্রফিট বাড়িয়ে তুলতে পারবেন।
অনলাইন বিজনেসে আপনাকে প্রতিযোগীতা করতে হয় বিশ্বের বড় থেকে ছোট সকল ই-কমার্স প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে।
এই মার্কেটে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হলে শুধুমাত্র কম মূল্যে প্রোডাক্ট অফার করার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়।
মূল্য নির্ধারণের কৌশলটি হতে হবে এমন যা কাস্টমার আকৃষ্ট করে এবং প্রোডাক্টটির জন্য পরিশোধিত মূল্যের সমানুপাতিক উপযোগিতা নিশ্চিত করবে।
তাহলে আপনাকে জানতে হবে, মূল্য নির্ধারণের কৌশলগুলি।
যা আপনার ই-কমার্স বিজনেসের প্রোডাক্টের মূল্যের সাথে প্রোডাক্টের উপযোগিতার সমন্বয় তৈরির মাধ্যমে অনলাইন বিজনেসে সফলতা নিয়ে আসে।
ই-কমার্স মূল্য নির্ধারণ কৌশল এর ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। প্রতিটি বিজনেসের জন্য মূল্য নির্ধারণ কৌশল বিভিন্ন রকম হতে পারে।
যদি না আপনি খুব বড় পরিসরে প্রোডাক্ট বেচাকেনা করেন, তবে অল্প পরিমাণ প্রোডাক্টের জন্য সামান্যতম মূল্যের পার্থক্য বিজনেসের মূলধনে বড় ধরনের ইম্প্যাক্ট করে।
তাই মূল্য নির্ধারণ কৌশল নিয়ে পরীক্ষা করার আগে যে বিষয়গুলো আপনার বিক্রয় মূল্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং লাভ লসের পরিমাণ কে প্রভাবিত করে সেই সকল কারণগুলো খুঁজে বের করা আবশ্যক।
মূল্য নির্ধারণ কৌশলে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো প্রধান ভূমিকা পালন করে।
অনেক সময় খেয়াল করবেন একই প্রোডাক্ট এর মূল্য নির্ধারণের সময় ১০০ টাকার পরিবর্তে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ১০০ সংখ্যাটির চেয়ে ৯৯ সংখ্যাটি কম শোনায়,যদিও পার্থক্য খুব সামান্য।
আপনার কাস্টমার যদি প্রাইস সেনসিটিভ হয়ে থাকে, তবে এই মূল্য নির্ধারণ কৌশলটি দ্বারা সে নিশ্চিতভাবে প্রভাবিত হবে।
আর এই কারনেই অধিকাংশ ই-কমার্স বিজনেসে প্রোডাক্ট এর জন্য মূল্য নির্ধারণে রাউন্ড ফিগারের থেকে কিছু পয়েন্ট কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়।
খেয়াল করে দেখবেন, একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটে উচ্চমূল্য থেকে নিম্ন মূল্য দিকে ক্রমানুসারে পেজে প্রোডাক্ট আপলোড করা থাকে।
এর মূল কারণ, কাস্টমার একটি ওয়েবসাইটের প্রথম পেজ থেকেই তার প্রোডাক্টটি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে এবং সবগুলো পেজ ভিজিট করার আগেই সে সম্ভব্য একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
ফলে পেজের প্রথমদিকে উচ্চমূল্যের প্রোডাক্টগুলো শোকেস করা থাকলে কাস্টমার প্রথম পেজের প্রোডাক্ট থেকে অর্ডার করলে এটি বিজনেসের অ্যাভারেজ সেলস ভলিউম বাড়িয়ে দেয়।
আবার অনেক ই-কমার্স সাইটে ফিল্টারিং অপশনে হাই থেকে লো এবং লো থেকে হাই মূল্য ক্রমানুসারে প্রোডাক্ট সাজিয়ে রাখেন।
অনেক কাস্টমার কমমূল্যের প্রোডাক্ট কিনতে পছন্দ করে।
সেক্ষেত্রে সে কম মূল্য থেকে ক্রমানুসারে তার বাজেট অনুসারে বেশির দামের প্রোডাক্টের দিকে ধাবিত হওয়া সুযোগ থাকে।
কাস্টমার আসল মূল এর থেকে কম দামে প্রোডাক্ট কিনতে পারলে খুশি হয়।কারণ কাস্টমার জিততে চায়।
একটি প্রোডাক্টে যখন মূল্য ছাড় দেওয়া হয় কাস্টমার মনে করে তার জন্য এই ডিলটি উপযুক্ত এবং সেক্ষেত্রে সে তার বাজেটের থেকে বেশি পরিমাণ কেনার চিন্তা করে।
অনেক ই-কমার্স সাইটে মূল্য ছাড় দেয়া প্রোডাক্টের জন্য আলাদা মেনু দেওয়া থাকে।
যে সকল কাস্টমার মূল্যছাড়ের প্রোডাক্ট কিনতে পছন্দ করেন তারা চাইলেই সবগুলো মূল্যছাড়ের প্রোডাক্ট একসাথে দেখতে পায়।
এই অংশে মূল্য নির্ধারণের কিছু অনৈতিক চর্চা অনেকে করে থাকেন।
দেখা যায় একটি প্রোডাক্টের আসল মূল্য থেকে বেশি মূল্য নির্ধারণ করে সেটিকে ডিসকাউন্টে আসল মূল্যের কাছাকাছি রেখে বিক্রয় করে।
এই চর্চাটি কমার্স বিজনেস এর জন্য কখনোই সুফল বয়ে নিয়ে আসে না।
বিজনেসের ইথিক্যাল চর্চার ক্ষেত্রে আপনি অবশ্য একটি প্রোডাক্ট পূর্বনির্ধারিত প্রাইস উল্লেখ সাপেক্ষে ছাড়কৃত মূল্য নির্ধারণ করবেন।
এটি একদিকে যেমন আপনার ই-কমার্স বেচাকেনা বাড়িয়ে দেয় অন্যদিকে কাস্টমারদের মনে আপনার উপর আস্থার জায়গা তৈরি হয়।
মূল্য ছাড় দেবার সময় কাস্টমার যেন পরিস্কার বুঝতে পারে সে ঠিক কত টাকা সেভ করল।
সবচেয়ে ভালো হয় যদি মূল্য ছাড় কৃত প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে একজন কাস্টোমার কত শতাংশ অথবা কত টাকা সেভ করল সেটি উল্লেখ করে দেন।
সব সময় মূল্য ছাড় কাস্টমারদের আকর্ষণ করে এমনটি নয়। অনেক সময় মূল্যবৃদ্ধি করলে কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়।
যদি ৫০% তারও বেশি মূল্য ছাড় দিয়ে একটি প্রোডাক্ট সেল করেন, তবে বিজনেসের সেল বাড়বে এমনটি নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না।
খেয়াল করলে দেখা যায়, পরিমিত মূল্যছাড়ের প্রোডাক্টগুলোর প্রতি কাস্টমারদের আগ্রহ বেশি।
তারা মনে করে ৫০% বা তার চেয়ে বেশি পরিমান মূল্য ছাড় দেয়া প্রোডাক্টগুলো মানহীন অথবা রিজেেক্টড। যে কারণে এগুলো বিক্রি করতে এত পরিমাণ মূল্য ছাড় দিচ্ছে।
অপরদিকে, যখন আপনি সামান্য মূল্য ছাড় দিচ্ছেন হয়তো সেটি ৫ শতাংশ অথবা ২০ শতাংশ পরিমান।
সেক্ষেত্রে কাস্টমারদের মনে এ ধারণা জন্মে যে, আপনি শুধুমাত্র কাস্টমারদের বেনিফিটের কথা ভেবে মূল্য ছাড় দিয়েছেন।
আবার আপনি যখন একটি প্রোডাক্ট এর মূল্য বাড়িয়ে দিবেন, এটি প্রকাশ করে সে প্রোডাক্টটির ডিমান্ড মার্কেটে অনেক বেশি এবং যোগান কম যার কারণে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই কৌশলে হয়তোবা ই-কমার্স সেলস অর্ডার এর সংখ্যার পরিমান কিছু কমে যেতে পারে।
কিন্তু প্রফিট বেশি হবার কারনে কম সংখ্যক অর্ডারেও আপনি বেশি পরিমান প্রফিট নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন।
মূল্যের সাথে প্রোডাক্টের কোয়ালিটির একটি সম্পর্ক রয়েছে। অনেক কাস্টোমার মনে করেন মানসম্পন্ন প্রোডাক্ট এর মূল্য সর্বদা বেশি হয়ে থাকে।
প্রাইস এংকারিং ই-কমার্স বিজনেসের পপুলার একটি প্রাইস কৌশল
একটি কমার্স ওয়েবসাইটে প্রথমে উচ্চমূল্যের প্রোডাক্ট এবং তার পরেই একই ধরনের প্রোডাক্টগুলোর কম মূল্যের ভ্যারিয়েশন পাশাপাশি থাকলে, কাস্টমার প্রথমেই উচ্চমূল্যের প্রোডাক্টটি দেখে ফলে বাকি প্রোডাক্টগুলো তুলনামূলকভাবে তার কাছে সস্তা মনে হয়।
রিপিট কাস্টমারদের জন্য এই কৌশলটি আদর্শ।
একজন কাস্টমারের ই-কমার্স কেনাকাটার উপরে পুরুস্কার পয়েন্ট, ডিসকাউন্ট অফার, বোনাস অথবা ফ্রী ডেলিভারি অফার করলে পরবর্তী কেনাকাটায় ছাড়কৃত প্রোডাক্ট অথবা সাধারণ প্রোডাক্ট এর ওপর এক্সট্রা একটি বেনিফিট পেয়ে থাকে।
যা তাদের পরবর্তী কেনাকাটায় আগ্রহী করে।
ধরুন, আপনি একটি কমার্স ওয়েবসাইট থেকে হেডফোন কিনেছেন।
যেটির মূল্য ছিল ২ হাজার টাকা, এর ফলে আপনি ১০০ টাকা বোনাস পেয়েছেন।
পরবর্তী সময়ে, আপনি আবার সেই ই-কমার্স সাইট থেকে কিছু কেনাকাটা করতে গেলে আপনার ক্রয় কৃত মূল্যের সাথে পূর্বের পাওয়া ১০০ টাকা বাদ দিয়ে মূল্য পরিশোধ করলেন।
যদি সে প্রোডাক্ট এর মূল্য অন্যান্য ওয়েবসাইটে ১০০০ টাকা হয়ে থাকে এবং আপনি বোনাস প্রাপ্ত ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্টটি কেনেন, তবে সেটি ৯০০ টাকায় কিনতে পারবেন।
কাস্টমার এটি ইতিবাচকভাবে নিয়ে থাকে।কারণ সে নিশ্চিত ভাবে কম মূল্যে জিনিস কিনতে পারবে।
অনেক সময় দেখা যায় একটি প্রোডাক্ট ই-কমার্স সাইট থেকে যে মূল্যে কিনছেন সেটি অন্য একটি ই-কমার্স সাইটে তুলনামূলকভাবে আরো কম দামে অফার করছে।
এক্ষেত্রে, একজন ই-কমার্স ব্যবসায়ী সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে মিউচুয়াল বিজনেস বেনিফিট সাপেক্ষে এক্সক্লুসিভ ভাবে অফার দেয়।
কাস্টমার আপনার বিক্রয় করা প্রোডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বেটার অফার এবং ডিল গ্রহণ করে।
যদিও বা চ্যানেল সেল ভিন্ন হয় কিন্তু সামগ্রিক অর্থে আপনার টোটাল সেল ভলিউম বেড়ে যায়।
ক্যাটাগরি অনুসারে মূল্য নির্ধারণ ই-কমার্স সাইটের আরেকটি কৌশল।
অনেক ই-কমার্স সাইটে দেখা যায় তারা দামি আইটেম যেমন ল্যাপটপ অথবা মোবাইল ফোন এর সব প্রোডাক্টের প্রাইস মার্জিন খুব কম রাখে।
অন্যদিকে তারা এক্সেসরিজ যেমনঃ কেবল, সফটওয়্যার হেডফোন এই সকল প্রোডাক্ট প্রফিট মার্জিন বেশি রাখে।
যে সব প্রোডাক্ট সচরাচর কাস্টমার সব জায়গা থেকে কিনতে পারে সে সকল প্রোডাক্ট সম্পর্কে তারা কমবেশি জানে।
এই সকল প্রোডাক্টের প্রাইস মার্জিন ও প্রফিট মার্জিন কম হলে কাস্টমার মনেকরে সাইটের রিকমেন্ডেড সকল প্রোডাক্টের প্রাইস কম হবে।
এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক বায়াস।
প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য উৎপাদন খরচ নির্ণয় করুন।
এই খরচের মধ্যে আপনার প্রোডাক্ট তৈরির উপাদান থেকে কর্মীর বেতনভাতা সহ প্রাসঙ্গিক যাবতীয় খরচ হিসেব করে সেই অনুপাতে প্রতিটি প্রোডাক্টের মূল্য বের করুন।
এবার নির্ধারণ করুন আপনি কি পরিমান প্রফিট করতে চান।
সে অনুপাতে আপনার প্রোডাক্টের মূল্যের সাথে বাড়তি মূল্য যোগ করে বাজার মূল্য নির্ধারণ করুন।
যে বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরী, আপনি যদি নতুন বিজনেস শুরু করেন তাহলে আপনার জন্য প্রফিট ধরে রাখা প্রয়োজন তাই সে অনুপাতে মূল্য নির্ধারণ করুন।
কিন্তু যদি বিজনেস একটি লম্বা সময় ধরে পরিচালিত করে থাকেন তাহলে, প্রতিযোগিতার বাজারে সর্বোচ্চ বেচাকেনায় মূল্য নির্ধারণ করতে বিগত দিনগুলিতে কি পরিমান প্রোডাক্ট বেচাকেনা করেছেন সেটিও বিবেচনায় রাখুন।
সংখ্যায় বেশি পরিমান প্রোডাক্টের বেচাকেনা হলে প্রফিট মার্জিন অল্প করুন এতে একদিকে বেচাকেনা বাড়বে অপরদিকে আয়ের পরিমানও বাড়বে।
বিজনেসে মূল্য নির্ণয় সংক্রান্ত যেকোনো পরিকল্পনায় এই অনলাইন ক্যালকুলেটরটি ব্যবহার করতে পারেন –https://www.omnicalculator.com/finance
বাজারে প্রোডাক্টের সহজলভ্যতা ও চাহিদা ভিত্তিক মূল্য নির্ণয়ের কৌশলে মনযোগী হন।
আপনার প্রোডাক্টের চাহিদা বাজারে প্রচুর, এক্ষেত্রে আপনি প্রোডাক্টের মূল্যে কিছুটা বেশি নির্ধারণ করতে পারেন।
আবার যদি এমন হয়, আপনার প্রতিযোগী একই ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে বাজারে ভাল অবস্থানে আছে তাহলে তার কাছাকাছি মূল্য নির্ণয় করে করুন।
তবে প্রতিযোগিতা মূলক মার্কেটে মূল্য নির্ধারণে প্রোডাক্টের উপযোগিতাকে প্রাধান্য দেয়া জরুরি ।
বাজারে আপনার প্রোডাক্টের অবস্থান কি পর্যায়ে তাঁর উপর মূল্য নির্ণয় বিজনেসে সফলতা নিয়ে আসে।
একটি প্রোডাক্টের মার্কেটিং ক্যাম্পেইন তৈরি করার সময় ইউনিক সেলিং প্রপোজিশন নির্ণয় করা হয়।
এবং সেই প্রোডাক্টটি বিশেষ উপযোগিতা আদর্শ কাস্টমারদের কাছে সবার থেকে আলাদা করে।
কিন্তু মূল্য নির্ধারণেও এটির গুরুত্ব রয়েছে।
কিছু কাস্টমার আছেন যারা প্রোডাক্টের দ্বারা কিভাবে উপকৃত হবেন এই বিষয়টি সেলারের দেয়া বার্তা থেকে পরিস্কার ধারণা পেলে তাঁর জন্য স্বাচ্ছন্দ্যে উচ্চ মূল্য পরিশোধ করেন।
বিশ্বখ্যাত স্পোর্টস ব্র্যান্ড নাইকি বলে, তাঁদের প্রোডাক্ট তৈরি করে শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের জন্য।
তাঁদের প্রতিটি প্রোডাক্ট খেলোয়াড়দের আরাম আর কর্মদক্ষতাকে বাড়িয়ে দেয় ।
এই বার্তা একজন খেলোয়াড় গুরুত্বের সাথে দেখে।
পেশাদার খেলোয়াড় তাঁর লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় জিনিসের কেনাকাটায় কার্পণ্য করেন না।
তাই এখানে কম দামি প্রোডাক্ট তেমন কোন সুবিধা করতে পারে না।
কিন্তু আপনার প্রোডাক্টটি যদি তাঁর চাহিদা পূর্ণ করতে পারে তবে আপনার নির্ধারিত মূল্যেই সে প্রোডাক্ট কিনবে।
এই কারনে ব্র্যান্ডেড প্রোডাক্টগুলো উচ্চমূল্যে বিক্রয় সম্ভব হয়।
Charm Pricing: এই কৌশল কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কার্যকরী ভাবে প্রমানিত।
প্রোডাক্টের মূল্য রাউন্ড ফিগার না করে কিছুটা কমিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয় এই পদ্ধতিতে।
উদাহরনঃ (৳ ২০০ এর পরিবর্তে ৳ ১৯৯) কেন এই কৌশলে কাস্টমার সাড়া দেয়?
সেটি জানার থেকে এটি জানুন কাস্টমার এই পদ্ধতিতে প্রতিবারই আকৃষ্ট হয় ।
Skim Pricing: একটি নতুন প্রোডাক্ট বাজারে নিয়ে এলে তাঁর মূল্য অনেক বেশি নির্ধারণ করা হয়, কিন্ত নির্দিষ্ট একটি সময় বিজনেস করার পর এর মূল্য কমানো হয় এই কৌশলে।
কিছু কাস্টমার আছেন যারা নতুন প্রোডাক্ট সবার আগে ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
আবার কিছু কাস্টমার আছেন সামাজিক ভাবে নিজের পদমর্যাদাকে উপরে দেখতে ভালবাসেন।
এই শ্রেণীর কাস্টমার দামি প্রোডাক্ট সবার আগে ব্যবহার করতে বেশি মূল্য পরিশোধ করতে খুব বেশি চিন্তা করেন না।
তাই এই কৌশলে আপনি লিমিটেড ক্রেতাদের কাছে অল্প পরিমান এক্সক্লুসিভ প্রোডাক্ট সেল করে অধিক প্রফিট করার পর প্রোডাক্টের মূল্য কমিয়ে বাকি সকল কাস্টমারদের কাছে সেল করার মাধ্যমে আপনার বিজনেসে ভাল প্রফিট ধরে রাখতে পারবেন।
Loss Leader Pricing: এটি কৌশলে একটি প্রোডাক্ট বাজার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে সেল করা হয়।
উদ্দেশ্য সেই প্রোডাক্টের মাধ্যমে কাস্টমারকে আকর্ষণ করে তাঁর অন্য সব প্রোডাক্ট সেল করা। সুপার শপে এই ধরনের মূল্য নির্ধারণ কৌশল লক্ষ্য করা যায়।
Discounts and Promotional Price: বর্তমান সময়ে কাস্টমার মূল্য ছাড় পেতে এতো অভ্যস্ত হয়ে গেছে যে তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্রোডাক্টের মূল্য ছাড় দিতেই হয়।
তাই এমন একটি মূল্য নির্ধারণ করুন যেটির উপর বিভিন্ন সময় মূল্য ছাড় দিতে আপনার অসুবিধা না হয়।
একজন কাস্টমার পরিশেষে আপনার প্রোডাক্টটি মূল্য পরিশোধ করেই কেনে।
আপনার নির্ধারণ করা মূল্য কাস্টমার পছন্দের প্রোডাক্টের জন্য তখনই সঠিক বলে মনে করে যদি সে প্রোডাক্টটি তাঁর চাহিদা মেটাতে সক্ষম বলে সে আশ্বাস পায়।
মূল্য নির্ধারণের একটি নির্দিষ্ট কৌশল সবার জন্য কাজে আসবে না।
কিন্তু প্রতিটি বিজনেসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রাইস কৌশলের দ্বারা কাস্টমারের দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে বিজনেসের সফলতা আনা সম্ভব।
মূল্য নির্ণয় কৌশলকে একটি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব যদি আপনি চান, তবে সেজন্য আপনার কাস্টমারদের চাহিদা সম্পর্কে যথাযথ ভাবে বুঝতে হবে।
আপনি আপনার ই-কমার্স বিজনেসের প্রোডাক্টের জন্য কীভাবে মূল্য নির্ধারণ কৌশল নির্ণয় করেছেন। আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com