ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর আগে অধিনায়কত্ব হারালেন টিগার

:
: ৬ মাস আগে

ঘরের মাঠে অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ শুরুর এক সপ্তাহ আগে অধিনায়কত্ব হারালেন দক্ষিণ আফ্রিকা যুব দলের ডেভিড টিগার। আজ শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা তাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

 

দেশটির ক্রিকেট বোর্ড শঙ্কা করছে ইসরায়েলকে সমর্থন করে টিগারের দেওয়া বক্তব্যের কারণে বিভিন্ন প্রতিবাদী গ্রুপগুলো (ইহুদি ও মুসলিম) আন্দোলনে নামতে পারে। যেটার ফলশ্রুতিতে হানাহানি, মারামারি থেকে শুরু করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই দেশের পরিস্থিতি, অংশ নেওয়া দলগুলো এবং তাদের খেলোয়াড় ও দর্শকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেয় সিএসএ।

উল্লেখ্য, নভেম্বরে শ্রীলঙ্কা থেকে সরিয়ে যুব বিশ্বকাপ দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে আসে আইসিসি।

 

অবশ্য অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দিলেও প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান টিগার বিশ্বকাপে খেলবেন দলের হয়ে। গেল অক্টোবরে ‘এবিএসএ জিউইশ অ্যাচিভার অওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে ট্যালেন্টেড এই ব্যাটসম্যান ‘রাইজিং স্টার’ পুরস্কার পান। এই পুরস্কার পেয়ে তিনি এক বক্তব্যে সেটি ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ইহুদি তরুণ যোদ্ধাদের উৎসর্গ করেন। তার চোখে তারাই প্রকৃত রাইজিং স্টার।

তার বক্তব্য ছিল এমন, ‘আমাকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে, তাই আমি এখন রাইজিং স্টার। কিন্তু প্রকৃত রাইজিং স্টার হলো ইসরায়েলের তরুণ যোদ্ধারা। আমি আমার এই পুরস্কার ইসরায়েল রাষ্ট্রকে এবং ইসরায়েলের প্রতিটি যোদ্ধাকে উৎসর্গ করতে চাই যারা যুদ্ধ করছেন। যাতে করে আমরা অভিবাসী থেকে উন্নতি লাভ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারি।’

 

এরপর বিশ্বকাপ দলে যখন টিগারকে নেওয়া হয় এবং অধিনায়ক করা হয় তখন থেকেই প্রো-প্যালেস্টাইন সমর্থকরা কেপ টাউনের নিউল্যান্ডসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করে। এমনকি নতুন বছরের শুরুতে তারা ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার টেস্ট ম্যাচের উপস্থিত হয়। তারা টিগারকে দলে রাখার প্রতিবাদ জানায়।

এদিকে ক্রিকেট বোর্ড এমন দিনে টিগারকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দিলো যেদিন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলার শুনানি চলছে। একদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবি উল্লেখ করেন যে গাজাকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করতেই গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। যা ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, গেল তিন মাসে ইসরায়েল গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাতে ফিলিস্তিনের ২৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশ নারী এবং শিশু।

 

ইসরায়েলি সহিংসতায় গাজার ২.৩ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইসরায়েলের দেওয়া অবরোধের কারণে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে।