বরিশাল ব্যুরো ॥ ফিলিস্তিনের উপর আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ও ইসরাইলী পণ্য বয়কটের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বরিশালের বাসদ। এদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বরিশালের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বরিশাল অশ্বিনী কুমার হল চত্বর এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অশ্বিনী কুমার হলে এসে শেষ হয়।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলটি বরিশাল কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার হতে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বর এসে শেষ হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোট বরিশাল জেলা শাখার অন্যতম সংগঠক অধ্যাপক নৃপেন্দ্রনাথ বাড়ৈ এর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দুলাল মজুমদার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সমন্বায়ক ডা. মনীষা চক্রবর্তী, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য অধ্যাপক আমিনুর রহমান খোকনসহ প্রমুখ।
শিক্ষার্থীদের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল জিলা স্কুল শিক্ষার্থী হাসনাইন বিন কবির, মোহাম্মদ তাজ, জুনায়েদ সাইফুল্লাহ, রেজভী আহমেদ সাইফ, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত শিক্ষার্থী মেজবাহ উদ্দিন আবিরসহ প্রমুখ। বাসদ এর বক্তারা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য বিস্তার এবং তেল সম্পদের উপর দখলদারিত্বের প্রয়োজনে ১৯৪৮ সালে ‘ইসরায়েল’ নামক একটি কৃত্রিম জায়নবাদী সামরিক রাষ্ট্রের সৃষ্টি করেন সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী।
সেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লক্ষ ১৫ হাজার আহত হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। জাতিসংঘের তথ্য মতে গাজায় ইতিমধ্যে প্রায় ৬৯ শতাংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা থেকে ২২ লক্ষ বাসিন্দা সরে গিয়ে ঐ অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছেড়ে দিতে বলেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা ও পশ্চিম তীরে বিলাসবহুল রিসোর্টসহ পর্যটন কেন্দ্র তৈরির ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের তাঁবেদার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো কথিত মুসলিম উম্মা ও ভ্রাতৃত্বের কথা বলে নির্বিকার রয়েছে শুধু নয় মিশর, জর্ডান, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কতিপয় মুসলিম দেশ জায়নবাদী ইসরাইল রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী বক্তব্যে বলেন, আমাদের ছোট ছোট ভাই -বোনরা ওই দেশে পারমাণবিক বোমার আঘাতে পাখির মত উড়ছে। এ আঘাত শুধু ফিলিস্তিনের জনসাধারণের উপর নয় সারা বিশ্বের মুসলমানদের উপর করা আঘাত। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জ্ঞাপন ও জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করতে হবে।
সারা দেশে ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রচারণা চালান। ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য জরুরি মেডিকেল টিম, ওষুধ ও খাদ্য সহায়তা প্রস্তুত রাখুন। ফিলিস্তিনের শিশু ও যুদ্ধাহতদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করে সহায়তা পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। মুসলিম বিশ্ব ও ওআইসির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তৈরি করুন। ফিলিস্তিনের উপর এ সন্ত্রাসী আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানিয়ে ঢাকাস্থ জাতিসংঘ অফিস ও দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান করুন। নারী সহ শিশু হত্যার বিচার পেতে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার উদ্যোগ নেবার দাবিও জানান। একইসাথে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলা-লুটপাটের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।