ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দক্ষিণাঞ্চলে চাল পায়নি ৮০ ভাগ পরিবার

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলে পরিবারের জন্য ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।

কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের ৩ লাখ ৬ হাজার ১২৪ জেলে পরিবারের ৮০ ভাগই চাল পায়নি।

এ কারণে রাতের আঁধারে অনেক জেলে পরিবার নদীতে জাল ফেলছে। সরকারের নিষেধাজ্ঞা না মানায় জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে।

শনিবার পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ১৪১ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মাছ ধরা, পরিবহণ, মজুত, বাজারজাতকরণ এবং কেনাবেচার সঙ্গে জড়িতদের জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বিভাগে এখন পর্যন্ত ২৮২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৭২১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

শুধু জেলেদের কারাদণ্ড ও জাল জব্দ নয়, তাদের কাছ থেকে ২ দশমিক ৫৯৪ টন ইলিশও জব্দ করা হয়।

জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা, পরিবহণ, মজুত, বাজারজাতকরণ, কেনাবেচা নিষিদ্ধ।

এ সময় মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বরিশাল বিভাগের ৩ লাখ ৬ হাজার ১২৪ জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ করে সরকার।

বিভাগের ছয় জেলায় ৬ হাজার ১৪২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হলেও ৮০ ভাগ জেলে পরিবারে এ চাল পৌঁছেনি।

জেলা মৎস্য অফিসার (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, চাল পেয়ে কোনো কোনো ইউপি চেয়ারম্যান বিতরণ করেছেন। আবার কোনো কোনো চেয়ারম্যান চাল নেননি। বিষয়গুলো উপজেলা প্রশাসন দেখভাল করে থাকেন।

হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ইকবাল হোসেন মাতুব্বর বলেন, চাল পেলে জেলেরা মাছ ধরতে নদীতে নামেন না।

কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের প্ররোচনায় অনেক জেলে মাছ ধরতে নদীতে নামে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার সময়ও মাছের খোলাগুলো উন্মুক্ত রয়েছে। এমন অবস্থায় কীভাবে মা ইলিশ নিধন বন্ধ হবে।

জাতীয় ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের চাল বরাদ্দ দেওয়ায় সুষ্ঠুভাবে চাল বিতরণে অসুবিধা হয়। অনেক সময় প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে পছন্দের লোকজনকে চাল দেওয়া হয়।

এছাড়া চেয়ারম্যানবিরোধী লোকজনকে জেলে কার্ড দেওয়া হয় না। ফলে প্রকৃত জেলা বাদ পড়ে যায়। বরাদ্দের চাল না পেয়ে তারা নদীতে নামতে বাধ্য হন।

এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের উপপরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার জানান, চাল বিতরণের কতগুলো ধাপ পার করতে হয়।

প্রথমে জেলা প্রশাসক, এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরে চেয়ারম্যানদের কাছে চাল চলে যায়।

চেয়ারম্যানদের কেউ কেউ সময় দিতে পারেন না। তবে আমরা খুব তৎপর রয়েছি। সঠিক সময়ে চাল বিতরণের বিষয়ে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।