বন্যা ও ভূমিধসে ইন্দোনেশিয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। পাঁচদিন আগে শুরু হওয়া এ বন্যায় এখন পর্যন্ত ৬৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী কয়েক দিনে আরও ভারী বর্ষণের আশঙ্কা করছেন তারা। সোমবার দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার বরাতে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আলজাজিরা।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (বিএনপিবি) জানিয়েছে, বন্যা শুরু হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় এ পর্যন্ত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী জাকার্তায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। বাকিরা জাকার্তার আশপাশের জেলাশহরগুলোর বাসিন্দা। ভারী বৃষ্টিতে ওই এলাকাগুলোর প্রায় তিন কোটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিএনপিবি-র মুখপাত্র অগাস উইবো সোমবার বলেন, ‘পাঁচদিনের বন্যায় আজ পর্যন্ত ৬৬ জন মানুষ মারা গেছেন।’ বন্যার তাণ্ডবে রাজধানী জাকার্তা ও সংলগ্ন শহরগুলোর মানুষজন মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়ে লক্ষাধিক মানুষ।
আবারও বৃষ্টি শুরু হলে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি হতে পারে এমন আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। দেশটির আবহাওয়া দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাকার্তা ও আশপাশের এলাকায় এখনও বজ্রপাতসহ ভারী বর্ষণ এবং তীব্র বাতাসসহ ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার। শুক্রবার এক বিবৃতিতে দেশটির আবহাওয়া, জলবায়ু ও ভূ-প্রকৃতি বিষয়ক সংস্থা জানায়, বিগত দেড়শ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ইন্দোনেশিয়ায় সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত ছিল এটি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই আবহাওয়ার এমন ভয়াবহতা।
লাখ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি। রাস্তা-সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধারকর্মীরা বন্যাদুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না। জাভা দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চল বানতেনের পুলিশ প্রধান তুমসি তোহির এএফপি-কে বলেন, ‘ওই এলাকার অনেক জায়গা ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সেখানে খাদ্য সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
তিনি জানিয়েছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে যাওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সেসব এলাকায় খাবার পৌঁছাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। তবে সেসব এলাকায় হেলিকপ্টার অবতরণ করার মতো জায়গাও নাকি নেই। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেখানকার মানুষজনকে।