এই ম্যাচটা খেলতে নামাই যেন হতাশার। বিশ্বকাপের এমন একটি ম্যাচ, যেটা কেউ খেলতে চায় না। তবে দুটি দলকে খেলতেই হয়। সেমিফাইনালে পরাজিত দুই দলকে মুখোমুখি হতে হয় স্থান নির্ধারণী খেলায়। সেন্টপিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হওয়া এই ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করলো বেলজিয়াম। চতুর্থ হলো ইংল্যান্ড।
খেলার শুরুতেই ইংল্যান্ডের জালে একবার বল জড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে রইল বেলজিয়াম। গোল করেন থমাস মুনিয়ের। খেলার ৮২ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেন ইডেন হ্যাজার্ড। শেষ মুহূর্তে একের পর এক গোলের চেষ্টা করেও বেলজিয়াম আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি।
গুরুত্বহীন হলেও এই ম্যাচে বেলজিয়াম এবং ইংল্যান্ড দু’দলই মাঠে নামিয়েছে শক্তিশালী একাদশ। যে কারণে খেলাটাও শুরু থেকে ছিল উপভোগ্য। যদিও পরিসংখ্যানের হিসেবে ইংল্যান্ডের পায়েই ছিল সবচেয়ে বেশি বলের দখল। ইংল্যান্ডের ছিল ৫৮ ভাগ আর বেলজিয়ামের ছিল ৪২ ভাগ। কিন্তু ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল পুরোটাই বেলজিয়ামের হাতে।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় বেলজিয়াম। ইংল্যান্ডের ডিফেন্সের ভুলই ছিল মূখ্য। নাসের চাদলির জন্য অনেক বেশি জায়গা ছেড়ে দেয় ইংলিশরা। তার বাড়ানো বল শেষ মুহূর্তে পা লাগিয়ে ইংল্যান্ডের জালে জড়িয়ে দেন থমাস মুনিয়ের।
১-০ গোলেই প্রথমার্ধ শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে খেলা চলতে থাকলেও কেউ কারও জালে বল জড়াতে পারছিল না। তবে, খেলার ৮২ মিনিটে অসাধারণ এক গোল করেন টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ফুটবলার ইডেন হ্যাজার্ড। কেভিন ডি ব্রুয়েন দুর্দান্ত এক পাস দেন হ্যাজার্ডকে। বক্সের মধ্যে কয়েকজনকে কাটিয়ে বাম প্রান্ত দিয়ে মাটি কামড়ানো এক শটে জড়িয়ে দেন ইংল্যান্ডের জালে।
অথচ তার ২ মিনিট আগেই অসাধারণ এক গোল থেকে রক্ষা পায় ইংল্যান্ড। ডি ব্রুয়েন বলে থ্রো করেন হাজার্ডের দিকে। থমাস মিউনিয়ারের ভলি অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। ৭০ মিনিটে নিশ্চিত গোল থেকে বেঁচে যায় বেলজিয়ান এরিক ডায়ার বেলজিক গোলরক্ষক থিবাত কুর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জড়িয়ে দিচ্ছিলেন বেলজিয়ামের জালে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দৌড়ে এসে একেবারে লাইন থেকে সেই বল ক্লিয়ার করেন অ্যাল্ডারওয়াইরেল্ড। একেবারে নিশ্চিত গোল থেকে বেঁচে যায় বেলজিয়াম।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের খেলা। যার দরুন চতুর্থ মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় বেলজিয়াম। ১১ মিনিটেই গোল শোধ করার সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। রাহিম স্টার্লিং বাম পায়ের দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন। কিন্তু বলটি চলে যায় পোস্টের বাইরে চলে যায়। পরের মিনিটেই গোল বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রুয়েন। বক্সের মাঝ থেকেই ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শট নেন ব্রুয়েন। কিন্তু বলটি বাম পাশ ঘেঁষে চলে যায়।
১৪ মিনিটে ইংল্যান্ডের ড্যানি রোজের কাছ থেকে বল পেয়ে ফ্যাবিয়ান ডেলফের ডান পায়ের দারুণ এক শট বলে যায় বক্সের বাইরে। ১৫ মিনিটে কাইরণ ট্রিপারের কাছ থেকে বল পেয়ে রুবেন লফটাস-চেক দারুণ এক হেড নেন। কিন্তু বক্সের মধ্যে লাফিয়ে উঠে সেই বল ঠেকিয়ে দেন বেলজিয়ামের গোলরক্ষক কুর্তোয়া।
২০ মিনিটে ইংল্যান্ডের হ্যারি ম্যাগুইরে আরও একবার দারুণ হেড করে গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু গোলরক্ষকের ক্ষিপ্রতায় এবারও বেঁচে যায় বেলজিয়াম। ২৩ মিনিটে হ্যারি কেইনের ডান পায়ের শট মিস হয়ে যান। দারুণ সুযোগ পেয়েও বলটি জড়াতে পারলেন না জালে। ২৪ মিনিটে আরও একবার গোল মিস করলেন রাহিম স্টার্লিং।
৩৫ মিনিটে ইউরি তিয়েলম্যান্স দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন গোল করার। ডান পায়ের শট মিস করেন তিনি। ৩৫ মিনিটে টবি অ্যালডারউইয়ারল্ড ডান পায়ের শট নেন। কিন্তু বক্স মিস করেন তিনি। ৪৫ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুয়েনের চেষ্টা রুখে দেয় ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডাররা। ২ মিনিট পর রোমেলু লুকাকু আরও একটি দারুণ সুযোগ পান। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি।